সরকারি খাস জমি ভূমিহীনের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বন্দোবস্ত দিতে হবে। ভূমিদস্যুদের দখলে থাকা খাস জমি উদ্বার করে ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত দিতে হবে। দীর্ঘ দিন ধরে ভূমিহীন নেতা কর্মীদের নামে ঝুলে থাকা মিথ্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি যদি কোন সরকারি কর্মকর্তা খাস জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দিতে টালবাহানা করেন তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভূমিহীন নেতা প্রয়াত সাইফুল্লাহ লস্কার,অ্যাড. আব্দুর রহিম ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সরদারের চিন্তাধারা বাস্বায়ন করতে হবে। বর্তমান সময়েও বাঁকালের ইমান আলীর মত জেলার বিভিন্ন স্থানে ভমিদূস্যুরা খাস জমি ভোগদখলে রেখেছেন। পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন কালু জেলা প্রশাসনের নামে সরকারি খাস সম্পত্তিতে মাছ চাষ করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করে খাচ্ছেন। এ ধরণের ভূমিখাদকদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। ১৯৯৮ সালে কালিগঞ্জের বাবুরাবাদ ভূমিসস্ত্রাসী ও প্রশাসনের গুলিতে নিহত জায়েদার কথা স্মরণ করে খাস জমির অধিকার আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
শনিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরার পুরাতন আইনজীবী ভবনে অনুষ্ঠিত জেলা ভূমিহীন সমিতির সঙ্গে অনুষ্ঠিত উপজেলা কমিটিগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সাতক্ষীরা জেলা ভমিহীন সমিতির সভাপতি কওছার আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা ভমিহীন সমিতির উপদেষ্টা অধ্যাপক আবু আহমেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এড. ফাহিমুল হক কিসলু।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা ভমিহীন সমিতির উপদেষ্টা ওহাব আলী সরদার, জেলা ভমিহীন সমিতির সহ-সভাপতি গোলাম রসূল, আবদার রহমান, আব্দুস সাত্তার, শওকত আলী, হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, রহমত আলী, শাহজাহান আলী ছোট বাবু, পৌর শাখার সভাপতি হাসান মাহমুদ ক্যাপ্টেন, নাজমা খাতুন,খাদিজা খাতুন, শ্যামনগর উপজেলা সভাপতি মোকছেদ আলী, কালিগঞ্জ উপজেলার সভাপতি মোশাররফ হোসেন, দেবহাটার সভাপতি আব্দুল গফফার, সদর সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, কলারোয়ার শেখ আনছার আলী, তালা-পাটকেলঘাটার সভাপতি আদিত্য, আশাশুনি উপজেলার ভূমিহীন নেত্রী মারফা খাতুন প্রমুখ।
সভাপতি কওছার আলী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ বলেন , বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের প্রকল্প বাস্বায়ন করতে ভূমিহীন নয় এমন লোকদের তালিকা তৈরি করে মাইক্রো ক্রডিট ব্যবসা পরিচালনা কর যাচ্ছে। তারা বরাবরই ভূমিহীন আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দিতে চান। তারা সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্য ভূমিহীনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে নানা ষড়যন্র অব্যাহত রেখেছেন। উত্তরণসহ আরো কয়েকটি এনজিও ভূমিহীন অসহায় মানুষদের সামনে রেখে লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করে গেলেও কখনো গরিব মানুষের স্বার্থ কাজ করে না। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে জেলা শহরে মিছিল, মানববন্ধনসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, অথচ প্রকৃত ভূমিহীনরা বসবাসের মত জায়গা পাচ্ছ না। তাদের কাছ থেকে খাস জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের মধ্যে বদোবস্ত দিতে হবে। সম্প্রতি খাল ধার থেকে উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনদের পূর্ণবাসনের জন্য বার বার বলা হলেও তাদের পুর্নর্বাসন করা হচ্ছে না। অবিলম্বে তাদের পূর্নবাসন করতে হবে।
এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে প্রতিটি উপজেলার কমিটি গুলো পুন:গঠন করে গতিশীল করতে হবে। এছাড়া যারা ভূমিহীণ আন্দোলন করতে গিয়ে মারা গেছেন। তাদের কথাও স্মরণে রাখতে হবে। সঠিক নেতা নির্বাচন করার পাশাপাশি সাতক্ষীরা শহরের ভূমিহীন সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে তাহলে দাবি আদায় সহজ হবে।