আচমকাই ঠাকুরগাঁও চিনির কলের (ঠাচিক) শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সভা। সেইসাথে সভায় পূর্বের কমিটিকে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়। যদিও এই কমিটির বিশ ভাগ সদস্য সেই সভায় উপস্থিত ছিলোনা বলে অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার(৬ ডিসেম্বর) রাতে ঠাকুরগাঁও রোড কমিউনিটি সেন্টারে এই সভার আয়োজন করেন ঠাচিক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি উজ্জল হোসেন।
তবে এই সভার বিষয়ে জানেইনা ঠাচিকের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ শ্রমীক। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শ্রমীক ও কর্মচারী সদস্যের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আন্দোলনে যাবার কথা বলছে। এমাসেই সুগারমিলের আখমাড়াই শুরুহবার কথা থাকায় বিপাকে পরেছে মিল কতৃপক্ষ।
ঠাকুরগাঁও চিনির কলের কর্মচারী ও শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, এই ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনো ব্যালটে নির্বাচন ছাড়া কমিটি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু কয়জন মিলে ইচ্ছা মতো কমিটি দিলো। এ কেমন অরাজকতা। আমরা মানিনা। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা কর্ম বিরতির মতো আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এমন ঘটনায় সংগঠনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা প্রাকাশ করছেন ঠাচিক শ্রমীক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আঃ কুদ্দুস সহ সংশ্লিষ্টরা।
আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এটা ঠাচিকের কর্মচারী ও শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশনকৃত সংগঠন। এই ইউনিয়নের একটা গঠনতন্ত্র আছে। একটি সাধারণ সভা ডাকতে হলে কমপক্ষে সাতদিন আগে জানাতে হয়। কিন্তু এই সভার কথা আমি শুনেছি আয়োজনের ঘন্টাখানেক আগে। এছাড়াও ৭২৮ জন সদস্যের ইউনিয়ন এটা। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলো ৬০/৬৫ জন। এটাকে সাধারণ সভা হিসেবে মানবো কিভাবে?
গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২০ অনুযায়ী বার্ষিক বা বিশেষ সাধারণ সভায় মোট সদস্যের ৬৬ ভাগ সদস্য উপস্থিত থাকলে সভার কাজ চলানো যাবে। কিন্ত সরেজমিনে বহিরাগত বিভিন্ন মানুষের সমন্বয়ে সেই সাভায় সর্বোচ্চ ২০০ জনের উপস্থিতি লক্ষকরা গেছে। বহিরাগতদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি সদস্যের তুলনায় বেশী ছিলো।
সাতমাস আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে হ্যাঁ/না কন্ঠ ভোটে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়াহয় সেই সভায়। যোদিও গঠনতন্ত্রের ২১ ও ২৩ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুগারমিল প্রাঙ্গণে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন ছাড়া কমিটিকে পুনর্বহাল বা নতুন কমিটি গঠনের কোনো সুযোগ নেই।
একটি সাধারণ সভা আয়োজনের মাধ্যমে কমিটি পুনর্বহাল করার সত্যতা নিশ্চিত করে গঠিত কমিটির সভাপতি উজ্জল হোসেন বলেন, সভায় আমার সংগঠনের সদস্য সহ জেলা আ.লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সবার সম্মতিতে আগের কমিটি পুনর্বহাল করা হয়েছে।
তবে গঠনতন্ত্রের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে তিনি এড়িয়ে যান এবং ব্যস্ততার কথা জানিয়ে পরে দেখা করবেন বলে জানান।
এই বিষয়ে মুঠো ফোনে কথা হয় দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের রেজিষ্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও উপ পরিচালক আবুল বাশারের সাথে। তিনি বলেন, কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এর আগে তাদেরকে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিলো। নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথাও বলা হয় সেই পরিপত্রে। তবে তারা হ্যাঁ/না কন্ঠ ভোটে কমিটি গঠন করেছে তা এখনও জানিনা। আমার কাছে এখনও রিপোর্ট এসে পৌঁছায়নি। তবে ব্যালটে নির্বাচন ছাড়া অন্যকোন উপায়ে কমিটি গঠনের নিয়ম নেই। এই কমিটি গ্রহণযোগ্য হবেনা।