সাতক্ষীরায় পরকীয়ায় জড়িত থাকার কারনে তালাকপ্রাপ্তা নারী কর্তৃক এক স্কুল শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা গ্রামের মৃত. শেখ খবিরুদ্দিনের ছেলে বৃদ্ধ শেখ নজরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তবে তিনি বলেন, আমার একমাত্র ছেলে শেখ মোস্তাফিজুর রহমান (তুহিন) কালিগঞ্জের তেঁতুলিয়া বি.টি.জি আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে। বিগত ২০১১ সালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার স.ম নাজিম উদ্দীনের.মেয়ে মোছাঃ নাছরিন সুলতানার সাথে তুহিনের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর কয়েক বছর ভালো কাটলেও নাছরিনের বেপরোয়া চলাফেরার কারনে তুহিনের সাথে তার মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এসময় সে আমাদের বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর সেবা সশ্রুসা করতে অপারগতা প্রকাশ করে ছেলে তুহিনকে আলাদা হয়ে অন্যত্রে বসবাসের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। একপর্যায়ে তুহিন নলতায় বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু দিনের পুরোটা সময় তুহিন স্কুলে থাকার সুযোগে নাছরিন সুলতানা স্থানীয় এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। একারনে নাছরিন তার গর্ভে সন্তান নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে।
বৃদ্ধ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতিতে আমার ছেলে আমাকে ও তার মা’কে নলতায় তার ভাড়াবাড়িতে কিছুদিন থাকার জন্য নিয়ে গেলে আমার বৌমা নাছরিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং ছেলের সাথে প্রতিরাতে ঝগড়া করতে থাকে।
একদিন আমারা স্থানীয় ওই যুবককে নাছরিনের ঘরে যাওয়ার বিষয়টি তুহিনকে অবগত করি। এসময় স্ত্রীকে সাবধান করতে গেলে নাছরিন উল্টো আমার ছেলেকে হুমকি প্রদর্শণ করে বলে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে মিথ্যে মামলায় জেল হাজত খাটিয়ে চাকরি ছাড়া করবো। মামলায় মামলায় জর্জরিত করে তোর পুরো পরিবারকে পথে বসিয়ে ছাড়বো। এনিয়ে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে নাছরিন আমার ছেলের সাথে আর সংসার করবে না জানিয়ে তার বাবা’র বাড়িতে চলে
যায়। এসময় আমার ছেলে বাধ্য হয়ে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার স্ত্রীকে রেজিঃ তালাক প্রদান পূর্বক প্রাপ্য সমুদয় দেনমোহর ও ভদ্রোচিত ইদ্দতকালীন ভরন পোষ বাবদ এককালিন ১লক্ষ ৯ হাজার টাকা মানি অর্ডার সহ গত ১৭মে ডাকযাগে নাছরিন ও স্থানীয় চেয়ারম্যান বরাবর তালাকের নোটিশ প্রেরণ করে। ২০মে সে গুলো হাতে পেলেও তা গ্রহণ করেনি নাছরিন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তালাক প্রদানের এক মাস পরে ওই নাছরিন আমার ছেলের চাকুরির ক্ষতি করার জন্য মিথ্যে যৌতুক দাবির গল্প সাজিয়ে পাটকেলঘাটা
থানায় আমাকে, আমার স্ত্রী মর্জিনা বেগম, মেয়ে তানিয়া সুলতানা, জামাতা শেখ আসাদ উল্লাহ ও ছেলে তুহিনসহ ৫জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলায় গত ৭ ও ৮ জুলাই আমার ছেলে ও আমরা স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাই। ১২ জুলাই আমারা স্বামী-স্ত্রী আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাই। এখবর জানতে পেরে তালাকপ্রাপ্তা নাছরিন বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি প্রদর্শন করে বলছে, একটি মামলায় জামিন পেলেও সমস্যা নেই। আরো একাধিক মিথ্যে মামলা দিয়ে তাদের পরিবারকে পথে বসিয়ে নিঃস্ব করে ছাড়বো। একই সাথে মিথ্যে তথ্য দিয়ে একটি অনলাইন পত্রিকায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যেচার করে সংবাদ পরিবেশন করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যে ও বানোয়াট।
তিনি একজন অসহায় বৃদ্ধ হিসেবে তালাক প্রাপ্তা ছেলের সাবেক স্ত্রী নাছরিনের দায়ের করা মিথ্যে মামলার দায় থেকে অব্যহতি পেতে এবং আগামীতে যাতে আর কোন মিথ্যে মামলা করতে না পারে তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বি: দ্র: প্রতিবেদনটি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ই-মেল থেকে প্রেরণকৃত।