সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পুড়িয়ে হত্যা প্রচেষ্টার মামলার আসামীরা মামলা তুলে নিতে বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন শ্যামনগর উপজেলার মানিকখালী গ্রামের নিত্যানন্দ মন্ডলের ছেলে ভবসিন্ধু মন্ডল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ প্রতিবেশী হাফিজুর রহমানের মেয়ে হীরা মানিকখালীস্থ আমার চিংড়ি ঘেরে মাছ ধরছিল। আমি এঘটনার প্রতিবাদ করায় হাফিজুরের সাথে আমার বিরোধ হয়। এঘটনার জের ধরে ওইদিন রাতে হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে তার ভাই সাইদুল ইসলাম খোকন, আবু মুছা, তাদের পিতা মুজিবুর রহমান ও সাইদুলের ছেলে শাহিনুর রহমানসহ ৪/৫ জন আমার ঘেরে বাসায় ঢুকে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে আমাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্যার্থ হয়ে ঘেরের বাসার বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় আমি দরজা ভেঙ্গে পানিতে লাফিয়ে পড়ে জীবনে
রক্ষা পাই। এঘটনায় আমার স্ত্রী চম্পা রানী বাদি হয়ে শ্যামনগর থানায় একটি হত্যা প্রচেষ্টার মামলা দায়ের করে। পরে হাফিজুর গংরা মামলা তুলে নিতে আমাদেরকে খুন জখমসহ মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দিতে থাকে।
একপর্যায় হাফিজুর গংরা আমার নামে একটি মিথ্যে চাঁদাবাজীর মামলা করে। এরপরও মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত শুরু করে। ভবসিন্ধু মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, ভৈরব নগর মৌজায় এস এ ১৫৯ খতিয়ান, হাল ৬০৯ ও ৩৭৭ ডিপি খতিয়ানে আমার পিতা ও মাতার নামে ক্রয় করা ১ একর ৫৩ শতক জমিতে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু হাফিজুর উক্ত সম্পত্তির মূল মালিক হোসেনপুর গ্রামের হোসেন আলী মীরের ছলে মিজানুর রহমানকে ভুল বুঝিয়ে আমাদের লেলিয়ে দিয়েছে।
অথচ মিজানুরের পিতা হোসেন মীর এবং তার চাচারা ১৯৮৬ হতে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দলিলে উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করেছিল। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করেন আমার পিতা। বর্তমানে ওই সম্পত্তি আমার পিতা নিত্যানন্দ মন্ডল ও মাতা গীতা রানী মন্ডলের নামে মিউটেশন ও রেকড হয়েছে।
কিন্তু আমার বৈধ দলিল না মেনে হাফিজুর রহমান উক্ত সম্পত্তিতে লাগানো ধান কেটে নেয়াসহ সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, হত্যা প্রচেষ্টা মামলার দায় হতে অব্যহতি পাওয়ার জন্য হাফিজুর গংরা এধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে জমি-জমা দখল, খুন জখম, ও মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানিসহ নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে তারা। হাফিজুর গংয়ের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছি। তার ভয়ে বর্তমানে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরপত্তা নিয়ে শংকার মধ্যে আছি। তিনি হাফিজুর গংয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক নিজেও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে তার বৃদ্ধ পিতা নিত্যানন্দ মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।
বি: দ্র: প্রতিবেদনটি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ই-মেল থেকে প্রেরণকৃত।