মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নাম করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার ৫৬ দিনেও সন্ধান মেলেনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের খাসবাগান গ্রামের কৃষ্ণপদ বিশ্বাসের ছেলে মিলন বিশ্বাসের। গত ৩ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ মিলন বিশ্বাসের ভগ্নিপতি সদর উপজেলার আহসানডাঙা গ্রামের রমাকান্ত সরকার বাদি হয়ে আশাশুনি থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও অভিযুক্ত কুদ্দুস মোড়ল ও রতন সরকারকে আটক করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধার করা যায়নি মিলন বিশ্বাসকে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের আহসানডাঙা গ্রামের অভিমন্যু সরকারের ছেলে রমাকান্ত সরকার জানান, তার শ্যালক মিলন বিশ্বাসকে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে আশাশুনি উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের খাসবাগান গ্রামের আব্দুর রহমান মোড়লের ছেলে কুদ্দুস মোড়ল ও সোনাই গ্রামের কার্তিক সরকারের ছেলে তার(রমাকান্ত) স্ত্রী সান্তনা সরকারের কাছ থেকে ও তার শালিকা লতা রানী সরকারের কাছ থেকে চুক্তিপত্র করে চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কয়েক দফায় দেড় লাখ টাকা গ্রহণ করে। এ ছাড়াও তার শ্যালক মিলন বিশ্বাসের দেড় বিঘা জমি বিক্রি করার নামে ও বিক্রি করে খাসবাগানের পঞ্চরাম বিশ্বাসের কাছ থেকে এক লাখ ৭০ হাজার, কেনারাম বিশ্বাসের কাছ থেকে এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা, মহাদেব বিশ্বাসের কাছ থেকে চার লাশ ও ছিদ্দাপুরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেয় কুদ্দুস ও রতন। এ ছাড়াও তারা মিলনের জমি বিক্রি করার জন্য অগ্রিম হিসেবে আরো সাত থেকে আট লাখ টাকা গ্রহণ করে।
সবমিলিয়ে মিলন, মিলনের মা সন্ধ্যা রানী বিশ্বাসের কাছ থেকে প্রায় ১৮ লাখ টাকা গ্রহণ করে। গত ১৪ জুলাই দিবাগত রাত তিনটার দিকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে মিলনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুদ্দুস ও রতন একটি মটর সাইকেলে করে নিয়ে যায়। ১৫ জুলাই ০১৮৭৫-৬০৮১৭০ নং মুঠোফোন থেকে তার মোবাইলে রিং করে বলে যে সে কুদ্দুস ও রতনের সঙ্গে ঢাকায় আছে ও ২০ জুলাই সে মালয়েশিয়ায় যাবে। ২১ জুলাই মিলনের মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর খবর দিতে এসে শালিকা লতা রানী সরকারের কাছ থেকে আরো ১২ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে গ্রহণ করে কুদ্দুস। এরপর থেকে মিলনের সঙ্গে তাদের আর কোন যোগাযোগ নাই। রতান সরকারের বাড়িতে কয়েকবার গেলে সে প্রথমে ভাল আচরণ করলেও পরে তাদেরকে হেঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপরও কুদ্দুসের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করতে পারেননি। তিনি আশঙ্কা করছেন যে, মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নাম করে প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে কুদ্দুস, রতন পরিকল্পনা করে মিলনকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার সহকারি উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান রবিবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে জানান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশে তিনি কুদ্দুস ও রতনকে আটক করা ও মিলনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নাম করে কুদ্দুস ও রতন তাদেরই বন্ধু মিলন ও মিলনের স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে দাবি করে তিনি বলেন, কুদ্দুস ও রতনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার বলেন, সহকারি উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমানের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তিনি মামলা রেকর্ড করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।