সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সড়কের পাশে ব্যাগের মধ্য থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতককে নয়টি শর্ত পূরণের শর্তে এক সরকারি কর্মকর্তাকে দত্তক দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর ২০২০) সকালে কালিগঞ্জ উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় উদ্ধার হওয়া নবজাতককে দত্তক নিতে দরখাস্তকারীদের আবেদন যাচাই বাছাই শেষে এক সরকারি কর্মকর্তাকে শিশুটিকে দত্তক দিতে নয়টি শর্ত দিয়ে আদালতে সুপারিশ করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অর্ণা চক্রবর্তী, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুন্নাহার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন উপস্থিত ছিলেন।কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিশুটিকে দত্তক নিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২৯ জন লিখিতভাবে আবেদন করেন। আবেদন যাচাই বাছাই শেষে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে শিশুটিকে দত্তক দেয়ার জন্য শিশু আদালতের কাছে লিখিতভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। সেখান থেকে অনুমতি পেলে শিশুটিকে ওই সরকারি কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও জানান, দত্তক নিতে আগ্রহী পরিবারকে নয়টি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্ত গুলো হলো, যিনি শিশুটিকে দত্তক নেবেন, তিনি ওই শিশুর নামে গ্রামে বসবাস করলে ৫০ শতক ও শহরে বসবাস করলে ১০ শতক জমি প্রদান করবেন। শিশুটির নামে ব্যাংকে ৩০ লাখ টাকা ৬ মাসের মধ্যে এফডিআর করবেন এবং দত্তক গ্রহণকারী পিতামাতার সম্পত্তির অংশিদার হবে শিশুটি। তাকে অনার্স-মাস্টার্স পড়াতে হবে। তিনি পরবর্তী দ্বিতীয় কোন শিশু দত্তক নিতে পারবেন না। নিজ সন্তানের মত দেখভাল করতে হবে এবং সন্তানকেও পিতামাতার দেখভাল করতে হবে এবং পরবর্তীতে উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড আরোপিত শর্ত মানতে হবে।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৪ অক্টোবর ২০২০) সন্ধ্যায় উপজেলার গোলখালীর কাকশিয়ালী রাস্তার পাশে একটি শ্মশানের কাছে ব্যাগে জড়িয়ে ফেলে রাখা হয়েছিল শিশুটিকে। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করেন। পরে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের হেফাজতে রাখা হয় শিশুটি। তার নাম রাখা হয় মহারাজ। বর্তমানে শিশুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুস্থ রয়েছে।