সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের খোলপেটুয়া নদীর বাবুলালের খেয়াঘাট নামক স্থানে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সংকীর্ণ হয়ে গেছে। বাঁধটির কিছু অংশ প্রতিদিন নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ঝড় ও বৃষ্টি হলেই ওই বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে রবিবার দেখা গেছে, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ-২ এর ৪নং পোল্ডারের আশাশুনি উপজেলা সদর ইউনিয়নের বালাবাড়িয়া এলাকার বাবুলালের খেয়াঘাট এলাকা বেড়িবাঁধে ভাঙ্গন চলছে। প্রতিদিন একটু একটু করে ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে কোনো কোনো স্থানে দুই থেকে তিন ফুটের বেশি বাঁধ অবশিষ্ট নেই। কোথাও মাটি দিয়ে ভাঙ্গনরোধ করার চেষ্টা করছে স্থানীয়রা। মানুষজন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, বলাবাড়িয়া প্রাইমারী স্কুল থেকে বাবুলাল খেয়াঘাট সংলগ্ন প্রায় ৩০০ ফুট পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে। আশেপাশের বাড়ি থেকে শিশুদের ভয়ে মা-বাবা ভয়ে বের হতে দিচ্ছে না। দ্রুত বাঁধটি মেরামত না করা হলে ভেঙ্গে কয়েক শ’ চিংড়ি ঘেরসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে যেতে পারে। জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে পারে ওই এলাকার কয়েক হাজার পরিবার।
আশাশুনি উপজেলার বলাবাড়িয়া এলাকার আলমগীর কবির জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের খোলপেটুয়া নদীর বলাবাড়িয়া এলাকার বেড়িবাঁধ গত পাঁচ বছরে একাধিকবার ভেঙ্গে আশাশুনি সদর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাাবিত হয়েছে। প্রায় ছয় মাস ধরে ওই এলাকার বাবুলালের খেয়াঘাট এলাকায় বাঁধ ভাঙ্গন চলছে। ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে প্রায় তিন শত ফুট বাঁধ সরু হয়ে দুই থেকে তিন ফুটের বেশি অবশিষ্ট নেই। ওই স্থান দিয়ে সাইকেল চালিয়েও মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
একই এলাকার অনূপ কর্মকার জানান, ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে বাঁধের অবস্থা এমন দাঁড়িয়ে যে কোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হতে পারে। সামনে বর্ষা মৌসুম এখনই যদি বাঁধ সংস্কার না করা না যায় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আশাশুনি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হোসেন আলী জানান, গত ছয় থেকে সাত মাস ধরে বাঁধ ভেঙ্গেছে। বতর্মানে বলাবাড়িয়ে এলাকা তিন শত ফুটের মতো এলাকা বাঁধ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সরু হয়ে গেছে। এতটাই সরু হয়েছে তার উপর দিয়ে একটা ভ্যান কিম্বা সাইকেল চলাচল করতে পারে না। গত রোববার ওই এলাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে চার বিঘা জমি কেনার চেষ্টা চলছে। জমি না হলে নতুন করে বাঁধ করা যাবে না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহনেওয়াজ তালুকদার জানান, বাঁধটি তিনি পরিদর্শন করেছেন। ওই স্থান বাঁধ ভাঙ্গন চলছে। তবে যেহেতু এখন নদীতে ঢেউ নেই সে কারণে স্থানটি অতটা ঝূঁকিপূর্ণ নয়। তারপর বর্ষার আগে বাঁধটি মেরামত করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত দিলে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।