সাতক্ষীরা জেলার মানবাধিকার পরিস্থিতি -২০২২ প্রতিবেদন মূল্যায়ন শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউএনডিপি ও মানবাধিকার উন্নয়ন সংস্থা স্বদেশ’র যৌথ উদ্যোগে আজ বুধবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা খামারবাড়িতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো জামাল উদ্দীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আবদুল হামিদের সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরন চক্রবর্তী, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ,জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হারুন উর রশিদ, জাসদ নেতা শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না দত্ত, অ্যাড. নাজমুন নাহার ঝুমুর, উন্নয়নকর্মী আবু জাফর সিদ্দিক, নাজমুল আলম মুন্না, শরিফুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান সরদার, জাহিদ হোসাইন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া না মেনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাধারণ মানুষকে দীর্ঘ সময় আটক রাখার পর দাবিকৃত টাকা না পেয়ে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারন মানুষ এতটাই ভীত সন্ত্রস্ত যে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এমনকি সাংবাদিকরাও সংবাদ মাধ্যমে এসব প্রকাশ পারতে পাচ্ছেন না। আবার পত্রিকায় লিখলেও হুমকির সম্মুখিন হচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ভূমি অফিস, পাসপোর্ট অফিসসহ বিভিন্ন অফিসে সাধারণ মানুষ হয়রানি ও প্রতারণার শিক্ষার হচ্ছেন। সম্প্রতি শ্যামনগর উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখল করতে যেয়ে সেখানে নরেন্দ্রনাথ মুন্ডা নামের এক প্রবীণ আদিবাসীকে পিটিয়ে হত্যা এবং ওই পরিবারের দুইজন নারীকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। মামলার প্রধ্না আসামীরা জামিন পাওয়ায় ওই পরিবারের সদস্যরা হুমকিতে রয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার শ্যামনগরের উত্তর কদমতলীতে জমি জবরদখলে বাধা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা অসিত মুণ্ডাসহ তার পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে জখম করেছে। মামলা করায় হুমকিতে রয়েছে ওই পরিবারের সদস্যরা।
বক্তারা আরো বলেন, সাতক্ষীরা জেলা উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এখানে নিয়মিত প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে মোকাবেলা করে মানুষকে টিকে থাকতে হয়। বিভিন্ন সুযোগে এ জেলার প্রভাবশালীরা উপকূল রক্ষা বাঁধ কেটে লোনা পানি ফসলের জমিতে ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ করছে। এতে ধারাবাহিকভাবে মানুষের মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার, বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা থেকে। কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করে প্রভাবশালীরা পরিবেশ দূষণ ও মানবাধিকার লংঘন করছে। এসব প্রতিরোধে প্রথমে রাজনীতিবিদদের এগিয়ে আসতে হবে, তাদেরকে আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা পেতে হয়রানি হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে সকল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। কৃষি জমিতে কৃষকের অধিকার, জলাশয়ে মৎস্যজীবি ও জেলেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা বিষয়ক কথা বলেন নেতৃবৃন্দ।