দেশের প্রথম ভাষা শহীদ সাতক্ষীরার আশাশুনির আনোয়ার হোসেনকে রাষ্ট্রীয়ভাব স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব ও প্রথম আলো বন্ধু সভার আয়োজনে রবিবার বেলা সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী। প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম.কামরুজ্জামানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্যে রাখেন, সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, জেলা আ.লীগের জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. সুব্রত ঘোষ, আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম হাসনুজ্জামান হোসেন, মানবাধিকার কর্মী মাধব দত্ত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, ভাষা শহীদ আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষন কমিটির সভাপতি সচিচান্দ দে সদয়, সাধারণ সম্পাদক ও আশাশুনি প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক এস.কে হাসান, সাংবাদিক সেলিম রেজা মুকুল, আমিনুর রশিদ, হাফিজুর রহমান মাছুম, শেখ ফরিদ হোসেন ময়না, আকরামুল ইসলাম, প্রথম আলো বন্ধু সভার সভাপতি রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৩০ সালে বুধহাটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আনোয়ার হোসেন। তার বাবার নাম কনুই গাজী ও মা পরীজান বিবি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন বড়। বুধহাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন তিনি। পরে বুধহাটা বি.বি.এম কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার একপর্যায়ে খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪৬ সালে মেট্রিক পাস করেন।
এরপর খুলনার বিএল কলেজে পড়াকালীন সময় যোগ দেন ভাষা আন্দোলন। আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুলনার তৎকালিন গান্ধী পার্ক (বর্তমান হাদীস পার্ক) ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ইস্তেহার পাঠ করার পর আনোয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের কয়েকদিন পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে ভাষা আন্দোলনের মিছিল থেকে ১৯৪৯ সালে পুলিশ তাকে আবারও গ্রেফতার করে। রাখা হয় খুলনার কোতয়ালী থানায়। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখানে পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকায় ১৯৫০ সাল ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে খোপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় আনোয়ারকে। সেই গুলিতে নিহত হন আরও ছয়জন।
বক্তারা দাবি জানিয়ে বলেন, ইতিহাসের পাতায় আনোয়ার হোসেনের নাম থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে ভাষা সৈনিক বা ভাষা শহীদ হিসেবে কোন স্বীকৃতি দছওয়া হয়নি। আমরা সাতক্ষীরাবাসী দেশের প্রথম এই ভাষা শহীদকে দীর্ঘ ৭২ বছর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাসের দাবি বাস্তবায়ন করতে স্বোচ্চার হওয়ার আহবান করছি।