দরিদ্র স্বামী বিদেশ থাকায় বাপের বাড়িতে অবস্থানকারী এক নারীকে কৌশলে মোবাইল ফোন ডেকে নিয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে ব্লাক মেইল করার অভিযোগ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কচুয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতের নাম আমানুল্লাহ ওরফে সবুজ (৪০)। তার বাবার নাম আনারুল ইসলাম। আশাশুনি উপজেলার কচুয়া গ্রামের এক সন্তানের জননী এক নারী (২৫) জানান, উপজেলার নাকনা গ্রামের এক দিনমজুরের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে তার বিয়ে হয়। বর্তমানে চার বছরের এক ছেলে রয়েছে তাদের। অভাবের তাড়নায় স্বামী ভারতে কাজ করতে যেয়ে করোনার কারণে বাড়ি ফিরতে পারেনি। ফলে সে বাপের বাড়িতেই ছেলেকে নিয়ে অবস্থান করে আসছে। স্বামী বাড়িতে না থাকায় লেবানন ফেরৎ আমানুল্লাহ তাকে বাড়ির বাইরে এলেই কু’প্রস্তাব দিতো। তিন মাস আগে আমানুল্লাহ তাকে তার বন্ধুর মেয়ের মুখে ভাত অনুষ্ঠানে কচুয়া গ্রামে যেতে বলে। সেখানে তার বন্ধুর বাড়িতে কেউ না থাকার সূযোগ ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের চিত্র আমানুল্লাহ মোবাইল ভিডিও করে। তার কথামত না চললে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে দেড় মাসে আগে আঙুরের দোকান ক্যারাম বোর্ড খেলা শেষ সে একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে বাপ্পি, মিয়ারাজ সরদারের ছেলে আজাহারুল ও আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল কাদরকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে যায়। দরজা জানালা বন্ধ থানায় মোবাইল আমানুল্লাহ বলে যে এখনই তার ভিডিও ইন্টারনেট ছেড়ে দেব। সকালে তাকে গলায় দড়ি দিয়ে মরতে হবে। মরতে হবে তার বাড়ির লোকজনদের। একপর্য়ায়ে দরজা খুলে দিলে ওই চারজন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর মোবাইল ফোন থেকে ছবি ডিলেট করলেও গুগলে থাকা ছবি সে ইমোর মাধ্যমে তার কাছে আবার পাঠায়। একপর্যায়ে ওই চারজনের কাছে সে জিম্মি হয়ে পড়ে। বাধ্য হয় বৃহষ্পতিবার বিষয়টি সে তার বাবা, মা ও ভ্যান চালক ভাইকে জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আজাহারুল বৃহষ্পতিবার রাতে তার বাবা ও ভাইকে বাড়িতে ডেকে চারজন মিলে মারপিট করে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে বা থানা পুলিশ করলে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে আশাশুনি থানায় যেয়ে এজাহার দিলে পুলিশ আমানুল্লাহকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আমানুল্লাহ সবুজ ওই নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন ও ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করে দিয়েছেন বলেন জানান।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষিতা নারী বাদি হয়ে ধর্ষণ ও ধর্ষণ সহায়তা করার অভিযোগ চারজনের নামে উল্লেখ করে শুক্রবার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রধান অভিযুক্ত আমানুল্লাহ সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে। শনিবার তার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ও ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হবে।