রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় সংহতি জোরালো করার দাবী দেবহাটার কুলিয়ায় উপ-নির্বাচনে রওনকুল ইসলাম জয়ী দেবহাটার বিভিন্ন রাস্তায় ঠান্ডা পানি ও শরবত বিতরণ টুঙ্গিপাড়ায় স্মার্ট উপজেলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুদ গাজীর গোপালগঞ্জে নানা আয়োজনে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪ উদযাপন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের গণমিছিল   সাতক্ষীরায় তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত, জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরার আলিপুর ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন দেবহাটা উপজেলা পুষ্টি সমন্বয় কমিটির মিটিং বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ও প্রাক্তন ফুটবলার শামছুর রহমানের মৃত্যুতে ডি.বি ফ্রেন্ডস স্পোর্টিং ক্লাবের শোক 

এক সিদ্ধান্তে বদলে গেল যুবকের জীবন!

✍️মো. মুশফিকুর রহমান (রিজভি)🔏 নিজস্ব প্রতিবেদক ☑️
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১৮২ বার পড়া হয়েছে
২৩ বছরের টগবগে যুবক মো. ইমরান হুসাইন। তার সমবয়সী গ্রামের আর আট-দশটা যুবকের মত লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষিত বেকার হওয়ার অপেক্ষায় না থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষিতে মনোনিবেশ করে নিজের জীবনের গল্পটাকে লিখলেন একটু ভিন্নভাবে। যে গল্পে নেই মামা-খালু অথবা টাকার অভাবে চাকরি না পেয়ে হতাশ হওয়ার অধ্যায়। তবে ইমরান হুসাইনের গল্পে আছে তরুণ উদ্যোক্তা হয়ে নিজের ভাগ্য বদলে লাখপতি হওয়ার এক সুখকর চিত্র।

মো. ইমরান হুসাইন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজাবাক্স গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। অনার্স তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নের পাশাপাশি বাবার সাথে পেয়ারা ও কুল বাগান করে ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তিনি। তবে প্রথম দিকে ইমরান কৃষিকাজে যুক্ত হতে চাননি। তিনিও তার অন্যান্য বন্ধুদের মত চেয়েছিলেন কোন একটি সরকারি দপ্তর অথবা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতে। তবে চাকরির বাজারে প্রবেশ করা অনেক কঠিন উপলব্ধি করে একসময় ভেবেছিলেন ফ্রান্স প্রবাসী হবেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দৈন্যতার কারণে সেটাও হয়ে ওঠেনি। তাই ইমরান হুসাইন সিদ্ধান্ত নেন বাবার মতো তিনিও কৃষিতে আত্মনিয়োগ করবেন।

উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ২০১৭ সালে বাবার সাথে শুরু করেন কৃষিকাজ। সেসময় তিনি ও তার বাবা মিলে সবজি চাষ করতেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই ভাগ্যদেবী যেন তার সহায় হচ্ছিল না। সবজির ফলন ভালো না হওয়ায় আশানুরূপ লাভের মুখ তারা দেখতে পাননি। তাই ২০১৮ সালে এসে ইমরান হুসাইন সিদ্ধান্ত নিলেন সবজির পরিবর্তে পেয়ারা বাগান করবেন। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে তিন বিঘা জমিতে শুরু করলেন পেয়ারার চাষ। সে জমিতে তারা ৩০০টি থাই-৩ জাতের পেয়ারার চারা রোপণ করেন। নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে উঠে তাদের পেয়ারা গাছ। বছর না পেরুতেই আসে ফুল-ফল। পেয়ারা বাগান থেকে বেশ লাভও হচ্ছিল তাদের কিন্তু বিপত্তি বাধে ২০২০ সালে এসে। সে বছর সুপার সাইক্লোন আম্ফানে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় তার পেয়ারা বাগান।

পেয়ারা বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইমরান এবার সিদ্ধান্ত নিলেন কুল বাগান করার। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পরবর্তী সময়ে সাত বিঘা জমিতে বল কুল, টক কুল ও থাই আপেল জাতের কুলের চারা রোপণ করেন তিনি। একবছর পরেই তার বাগানে ফল আসতে শুরু করে। চলতি মৌসুমে তার বাগানে কুলের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বিঘা প্রতি ৭০-৭৫ মণ কুল হয়েছে তার বাগানে। এ বাগানের কুল সর্বনিম্ন ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে প্রতি বিঘা বাগান করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা আর এক বিঘা জমির কুল বিক্রি হচ্ছে দেড় লক্ষাধিক টাকায়।

বাগান থেকে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় এবং লাভবান হওয়ায় বেশ খুশি মো. ইমরান হুসাইন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে পেয়ারা বাগান ক্ষতিগ্রস্থ হলে বেশ হতাশ হয়ে পড়ি। পরে সিদ্ধান্ত নেই কুল বাগান করার। আর সে সিদ্ধান্তেই আমার জীবনের গতিপথ বদলে গেছে। কুল বাগান করতে আমার প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আর এক বিঘা জমির কুল দেড় লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, একসময় ভাবতাম সরকারি চাকুরিজীবি হবো। কিন্তু এখন চাকরির কথা আর ভাবি না। আমার কুল বাগান নিয়েই আমি বেশ খুশি। আমার বাগানের কুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে এটা ভাবতেই ভালো লাগে।

মো. ইমরান হুসাইনের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে আমি ধান ও বিভিন্ন মৌসুমী সবজি চাষ করতাম। ছেলের পরামর্শে প্রথমে পেয়ারা বাগান করি। পেয়ারা বাগান থেকে বেশ লাভ হচ্ছিল কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাগান নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে আমরা কুল বাগান করি। পেয়ারা ও কুল বাগান করলে ধান ও সবজি চাষের চেয়েও বেশি লাভ হয়।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলারোয়া উপজেলার পৌরসভা এবং সবকটি ইউনিয়নের সর্বত্র কমবেশি কুলের চাষ হয়। এর মধ্যে কেরালকাতা এবং সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি কুল চাষ হয়। এবছর আমাদের উপজেলায় কুল চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০০ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয়েছে ৩২০ হেক্টর জমিতে। গতবছর আবাদ হয়েছিল ৩০০ হেক্টর জমিতে।

তিনি আরো বলেন, মো. ইমরান হুসাইনসহ কলারোয়া উপজেলায় তার মত যত কৃষক আছেন আমরা সবাইকে সবসময় সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন। এর বাইরেও কৃষক ভাইয়েরা কোন সমস্যা নিয়ে আমাদের উপজেলা কৃষি অফিসে আসলে আমরা তাদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০০ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৩১ অপরাহ্ণ
  • ১৮:২৮ অপরাহ্ণ
  • ১৯:৪৭ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!