শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
তালায় ৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করল প্রশাসন তালায় ইটভাটায় পড়ে ছিল বৃদ্ধের মরদেহ গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে গৃহবধূকে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ চুয়াডাঙ্গায় মোটরযানের উপর মোবাইল কোর্ট, দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার সহ আহত-৪ পদ্মা তোমাকে নিয়ে – কবি শেখ মফিজুর রহমান গোপালগঞ্জের ডিসি’র সাথে মুকসুদপুর উপজেলার নবাগত ইউএনও’র সৌজন্য সাক্ষাৎ ডিআইজি, খুলনা রেঞ্জ কর্তৃক ঝিনাইদহ জেলা পরিদর্শন সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. মাহাবুবর রহমান জেল হাজতে সাতক্ষীরায় জলবায়ু অভিঘাত ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহের উদ্বোধন

রাত পোহালেই সেই ভয়াল ১৭ আগষ্ট: দেশব্যাপী জেএমবি’র বোমা হামলার ১৫ বছর পুর্তি

রঘুনাথ খাঁ, জেষ্ঠ প্রতিবেদক:
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০
  • ৩০২ বার পড়া হয়েছে

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জঙ্গী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)  দেশব্যাপী ৬৩টি জেলায় একই সময় বোমা হামলা চালায়। এরই অংশ হিসেবে সাতক্ষীরার পাঁচটি স্থানে অংশ হিসেবে বোমা হামলা চালানোর ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে পরদিন সাতক্ষীরা সদর থানায় পৃথক পাঁচটি ও ওই সালের পহেলা অক্টঝবর আরো একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমান সাতক্ষীরার অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল ইসলামের আদালতে এসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আসামীরা একাধিক মামলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলখানায় অবস্থান করছে। ধার্য দিনে তাদেরকে আদালতে হাজির না করাতে পারায় সাক্ষীরা বার বার ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে স্পর্শকাতর এসব মামলার বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর থানা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী ৬৩ টি জেলায় প্রায় একইসময় বোমা হামলার অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা শহরর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বারান্দায়, শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক, বাস টার্মিনাল, খুলনা রোড়ের মোড় ও জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায় (পাঁচটি স্থানে) বোমা হামলা চালানো হয়। ঘটনার দিনেই সাতক্ষীরা শহরতলী ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশন আলীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ একই এলাকার জেএমবি জঙ্গি নাসিরউদ্দিন দফাদারকে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পুকুর গোসল করার সময় গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছার মনিরুজ্জামান মুন্না, আনিসুর রহমান খোকন, মনোয়ার হোসেন উজ্জল, কাসেমপুুরের গিয়াসউদ্দিন, খড়িয়াবিলের মোঃ বেলাল হোসেন, মোঃ আসাদুল হক, খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতরখালি গ্রামের মাহবুবুর রহমান লিটনসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। পর আশাশুনি উপজেলার কুল্যা গ্রামের নূর আলী মেম্বারসহ আরও তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এসব ঘটনায় পরদিন ১৮ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর থানায় যথাক্রমে সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালিন উপপরিদর্শক এক নজিবুলাহ, জসিমউদ্দিন, আবু তাহের, হযরত আলী ও সফিকুল ইসলাম পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করেন। ওই সালের পহেলা অক্টোবর সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম হোসেন বাদি হয়ে নাসিরউদ্দিন দফাদারসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পুলিশের হাত ঘুরে সিআইডি‘র কাছে ন্যস্ত হয়। সাত মাস পর সিআইডি‘র সহকারি পুলিশ সুপার মুন্সি আতিকুল ইসলাম ২০০৬ সালের ২৩ মার্চ প্রতিটি মামলায় ১৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আদালত সুত্রে  জানা যায়, ২০০৬ সালের ৬ জুন সাতক্ষীরা থেকে এ ছয়টি মামলা খুলনার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত ২০০৭ সালের ২৫ জুন বিচারের জন্য পাঁচটি মামলা ফেরত পাঠানো হয়। ২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে এ পাঁচটি মামলার সাক্ষী শুরু হয়। এ পর্যন্ত সাতক্ষীরা শহরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বারান্দায় বোমা হামলা মামলায় ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের, শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের বোমা হামলা মামলায় ৩৬ জনের মধ্যে ১১ জনের , বাস টার্মিনালের বোমা হামলা মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ১২ জনের, খুলনা রোড়ের মোড়ের বোমা হামলা মামলায় ৩৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ১১ জনের ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বোমা হামলা মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ১১ জনের ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়েরকৃত মামলায় (জিআর- ৮৮৭/০৫) ১১জনের সাক্ষী শেষ হয়েছে।

সাতক্ষীরার ছয়টি মামলার আসামি জেএমবি জঙ্গী সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা গ্রামের নূর আলী মেম্বার, শহরের ইটগাছা গ্রামের মনিরুজ্জামান মুন্না, খড়িবিলা গ্রামের মোঃ বেলাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন, মোঃ আসাদুল হক, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাসেমপুর গ্রামের গিয়াসউদ্দিন, আখড়াখোলা গ্রামের সাইফউদ্দিন, খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার সুতারখালি গ্রামের মাহবুবুর রহমান লিটন , ও মৃতদন্ড প্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হোসেন ওরফে রাসেল বর্তমান কারাগারে রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল ইসলামপুর চরে এলাকার মোঃ নাসিরউদ্দিন গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল পৌনে চারটায় মস্কিকে রক্তক্ষরণজনিত কারণে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে মারা যান। 

ছয়টি মামলার অভিযোগপত্রভূক্ত ১৯ জন আসামির মধ্যে উপরোক্ত নয়জন আসামি বর্তমান কারাগারে রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ তলুইগাছা গ্রামের মমতাজউদ্দিন, সাতানি গ্রামের মোঃ আবুল খায়ের, পাথরঘাটা গ্রামের ফকরউদ্দীন আল রাজী ও কলারোয়া উপজেলার পেটুলি গ্রামের নাঈমউদ্দিন (চারজন) পালাতক রয়েছে। গ্রেফতারকৃত মনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল ও আনিসুর রহমান খোকন ২০১১ সালের জুনে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায়। এর কিছুদিন পর তারা আবারও গ্রেফতার হলেও ফের জামিন লাভ করে। এছাড়া, জেএমবি শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুর ইসলাম ওরফে বাংলাভাই ও সামরিক প্রধান আতাউর রহমান সানির ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাদের নাম বাদ দিয়ে এ মামলার বিচার কাজ শুরু করা হয়েছে।

এদিকে দেশ জুড়ে জেএমবি’র বোমা হামলা মামলায় গ্রেফতারকৃত কয়েকজন আসামীর পরিবারের সদস্যরা জানান, ১১ বছরের বেশি সময় ধরে তাদের স্বজনরা জেলে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন থানায় এ ধরণর মামলা থাকায় কোন মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এমনকি তাদের জামিন ও মিলছে না। উপরন্ত তারা দেশের কোন কারাগারে অবস্থান করছে তা জানতে না পেরে দুশ্চিার মধ্যে রয়েছে।

জেএমবি মামলা সংক্রান্ত সরকারি দায়িত্ব থাকা সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. আব্দুস সামাদ সাংবাদিকদের জানান, সাতক্ষীরায় জেএমবি’র বোমা হামলা মামলার আসামীরা বিভিন্ন মামলায় দেশের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থান করছে। আদালত ও রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীদের ধার্য দিনে হাজির করালেও সকল কারাগার থাকা আসামীদের আদালতে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সাক্ষী গ্রহণ না হওয়ায় বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:২২ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০২ অপরাহ্ণ
  • ১৬:৩০ অপরাহ্ণ
  • ১৮:২৪ অপরাহ্ণ
  • ১৯:৪০ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!