“রাজনীতিতে ভাই বলে কোন শব্দ নেই,দলের স্বার্থই আগে” সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল। দলীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তিনি তার স্বাক্ষরে ৮ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছেন বলেও জানান তিনি।এছাড়াও তিনি বলেন ৮জনের মধ্যে তাঁর আপন বড় ভাই ও বর্তমান চাপাইর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুজ্জামান সেতুকেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।তিনি সোমবার কালিয়াকৈর পৌরসভার কালামপুর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারোনাকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আর মাত্র ৫দিন পর আগামী ২৮ নভেম্বর গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার নির্বাচন।১০ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীরা।এদিকে কালিয়াকৈর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হচ্ছে একই দিন।তবে, সাধারণ ভোটাররা নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ দাবী করেছেন। কালিয়াকৈর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণাকালে মেয়র, কাউন্সিলর ও ইউনিয়নের প্রার্থীরা নিজের ভোটের পাল্লাভারী করতে দিয়ে যাচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
রহিম নামের এক স্থানীয় ভোটার জানান, যিনি সুখে দুঃখে পাশে থাকেন এবং যার কাছে গিয়ে আশ্রয় পাবো তাকেই ভোট দিব।এছাড়া, নির্বাচনে যোগ্যপ্রার্থীকে বিজয়ী করতে সাধারণ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ দাবী করেছেন তারা।পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী একে অপরের ব্যানার ফেষ্টুন ছিড়ে ফেলা ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হুমকি প্রদান করছে এমটাই অভিযোগ করছেন তাঁরা।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী খাত্তাব মোল্লা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁর এক প্রতিপক্ষ নির্বাচনী অফিসে ঢুকে তার ছোট ভাই গাফ্ফার মোল্লাকে মারধর করে এবং নির্বাচনি পোষ্টার ছিনিয়ে নেয়। পরে হুমকি দিয়ে চলে যায়।পরে নিরাপত্তার জন্য কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেও লিখিত অভিযোগ দেয় হয়েছে বলে জানান তিনি।
পৌরসভার বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মজিবুর রহমান বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে ভোটের ফলাফল যাই হোক মেনে নিবেন তিনি।নির্বাচনের দিন ভোটারা যেন নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে প্রয়োগ করতে পারে এমন প্রত্যাশা করছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌরসভার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, নির্বাচনে কোন প্রকার সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।এর পাশাপাশি পুলিশ ও আনসারসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হবে।
প্রসঙ্গত ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে গঠিত কালিয়াকৈর পৌরসভায় ২০০৩ সালে কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মো. মজিবুর রহমান মেয়র হিসেবে চেয়ারে বসেন। এরপর সময় পার হলেও শ্রীফলতলী ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারন নিয়ে জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন নির্বাচন বন্ধ ছিলো। পৌরসভার সীমানার বিষয়টি সামাধান হলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘেষণা করেন।
কালিয়াকৈর পৌরসভার আয়তন- ২৪.৬৬ বর্গ কিঃমিঃ।জনসংখ্যা ২৫৫৯৬৭ জন। শিক্ষার হার: ৫৪%। পৌরসভায় মোট ভোটার ৯৫ হাজার ৪৩৫ জন।