সাতক্ষীরার আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক চেয়াম্যানের দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ কমপক্ষে ১০জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গদাইপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে গোলাম কিবরিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৮)।
আহত দুই পুলিশ সদস্যরা হলেন, উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন ও ওসির ড্রাইভার শরিফুল ইসলাম। এরমধ্যে গুরতর আহত শরিফুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গদাইপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শরবৎ হত্যা মামলার কয়েকজন আসামী সম্প্রতি আমলী আদালত -৮ থেকে জামিন পান। এরপর তারা এলাকায় স্বাভাবিকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে জামিন পাওয়া কয়েকজন বসে গল্প করছিলেন। এ সময় রহুল কুদ্দুসের কয়েকজন সমর্থক তাদের ওই দোকান থেকে উঠে যেতে বলে। এতে মোজাহারের ছেলে বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রহুল কুদ্দুস সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মারপিট শুরু হয়। এতে ওয়ায়েছ কুরনী, তুহিন বাবু, রফিকুল ইসলাম, সোহাগ, সাবীর হোসনসহ দু’পক্ষের কমপক্ষে ১০জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এরপর দূর্বত্তরা হঠাৎ পুলিশের উপর বিনা উস্কানিতে ইট-পাটকেল নিকৃষ্ট করে। এসময় পুলিশের গাড়িতে হামলা চালায় তারা। এতে আহত হন পুলিশের উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার গাড়ি চালক শরিফুল ইসলাম। একই সাথে ভাংচুর করা হয় পুলিশের গাড়িটি। গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য শরিফুলের করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর জানান, হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গোলাম কিবরিয়া ও মফিজুলকে গ্রেপ্তার করেন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে ২২ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরো ১০০/১৫০ জনের নামে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানে এখনও থমথম অবস্থা বিরাজ করছে এবং পুলিশ মোতায়েন রয়েছ। এদিকে, সংঘর্ষ আহতরা গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, খাজরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনওয়াজ ডালিম ও তার ফুপাতো ভাই সাবেক ভাই সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস সমর্থক গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘর্ষ, হত্যা, হামলা-মামলায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। শাহানেওয়াজ ডালিম আওয়ামী লীগ নেতা শরবৎ হত্যা মামলায় পলাতক থাকলেও তিনি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সব ধরণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।