সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামের সেই হাওলাদার বাড়ি বায়তুন নাজাত জামে মসজিদটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শুক্রবার সকালে মসজিদটি খোলপেটুয়া নদীর ভাটার টানে ভেঙ্গে পড়ে। এর আগে গত ১০ আগষ্ট থেকে উপকূলীয় রিং বাঁধ ভেঙ্গে উক্ত মসজিদসহ লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু করে। এরপর থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল মসজিদটি।
প্লাবিত এলাকায় পানি সাঁতরে মসজিদটিতে আযান ও নামাজ আদায় করতেন মসজিদর ঈমাম ও খতিব হাফেজ মঈনুর রহমান। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর মানুষের হৃদয় আকৃষ্ট হয়। এলাকার মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য নৌকার উপর বিশেষভাবে নির্মিত একটি ভাসমান মসজিদ সম্প্রতি উপহার দেন চট্টগ্রামের আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। সেখানে আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করলেন স্থানীয় মুসল্লিরা। মসজিদটিতে একত্র ৫০-৬০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, পার্শ্ববর্তী বন্যতলা এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। লোকালয়ের মধ্যে দিয়ে নদীর জোয়ার ভাটা শুরু হয়। ভাঙনের কবলে পড়ে অসংখ্য ঘর বাড়ি ভেঙ্গে পানিতে বিলিন হয়ে যায়।
তবে, গত দুই মাস যাবত মুল ভুখন্ড থেকে মসজিদটি আলাদা হয়ে যাওয়ায় সেখানে নামাজ আদায় করতে পারেননি মুসল্লিরা। আজ একবারেই বিলীন হয়ে গেল মুসলমানদের ইবাদতের ঘর এই মসজিদটি। ফজরের নামাজের পর যখন নদীতে ভাটা শুরু হয় সেই পানির টানে মসজিদটি ভেঙে পড়ে।
প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ি বায়তুন নাজাত জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব হাফেজ মঈনুর রহমান বলেন, ফজরের নামাজের পর মসজিদটি ভেঙ্গে পড়েছে। অবকাঠামো একবারেই বিলীন হয়ে গেছে। ধংস স্তুপ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেই থেকেই আমি এখানে বসে আছি, কি কিরবো ?
প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় বন্যতলা ভেঁড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকেই মানুষ পানিতে ভাসছে। বাঁধটি বাঁধার জন্য আমি চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন সহযোগিতাই করে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারণেই প্রতাপনগর ইউনিয়নটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আজ জুম্মার দিন মসজিদটিও ভেঙ্গে নদীতে চলে গেল। মুসলমান হিসেবে আমাদের জন্য এর থেকে কষ্ট আর হতে পারে না।