গাজীপুরের কোনাবাড়ী কলেজ গেইট এলাকায় তাজমহল হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (১০ই আগস্ট) সকালে শিশু আরাফাত হোসেনের(৬) প্রস্রাবের রাস্তায় সমস্যা থাকায় ৭০হাজার টাকার চুক্তিতে অপারেশন করতে নিয়ে আসা হয়েছিলো কোনাবাড়ী কলেজ গেইট এলাকার তাজমহল হসপিটালে।
আরাফাতের অভিভাবক জানান, শহীদ সোহরার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসােসিয়ট প্রফেসর ডা.আবুল হােসেন নামের এক চিকিৎসকের সাথে চুক্তি করে এই হাসপাতালে আনা হয়েছিলো। ডা.আবুল হােসেন গত ছয় মাস যাবত শিশুর চিকিৎসা করে আসছিলো। পরে তার পরামর্শ অনুযায়ী আরাফাতের বাবা শেখ শাহা আলম ও চাচা মাহাবুবসহ অভিভাবকেরা সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাজমহল হসপিটালে আরাফাতকে ভর্তি করেন।
ওই দিনই বিকাল সাড়ে চারটার দিকে শিশুটিকে অজ্ঞান করে অপারেশন শুরু করেন ডা. আবুল হােসেন। দীর্ঘ সময় আপারেশন থিয়েটার থেকে কেউ বের না হলে শিশু আরাফাতের অভিভাবকের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি হসপিটালের কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলেও তারা কিছু জানাতে রাজি হয়নি। রাত সাড়ে আটটার দিকে আরাফাতের জ্ঞান ফিরে না আসার কথা অভিভাবকেরা জানতে পারেন। তখন ডা. আবুল হােসেন ও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ নানা ছলচাতুরি করে শিশুটির লাশ হসপিটাল থেকে বের করার চষ্টা করে। পরে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জানায়, শিশু আরাফাতকে দ্রুত ঢাকার একটি হসপিটালের আইসিওতে ভর্তি করতে হবে। সেই সময় অভিভাবকরা কিছুটা বুঝতে পরেন তাদের আরাফাত আর পৃথিবীতে বেঁচে নেই। তবু আরাফাতকে নিয়ে রাতেই ধানমন্ডির ১৭ নম্বর এলাকার পিং কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আরাফাত কে আইসিওতে নিয়ে একজন চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। পরে আরাফাতের চাচা মাহাবুবকে ডেকে জানান, এই শিশু সন্ধ্যার দিকেই মারা গেছেন। পরে অভিভাবকেরা রাত তিনটার দিকে বিকল্প একটি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে আরাফাতের লাশ নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মট্রাে থানার সারদাগঞ্জ এলাকায় নিয়ে আসেন। বুধবার সকালে পারিবারিক কবর স্থানে আরাফাতের নামাজের জানাযা শেষে দাফন করা হয় বলে অভিভাবকেরা জানান।
নিহত আরাফাতের চাচা মাহাবুব জানান,শহীদ সােহরার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসােসিয়ট প্রফেসর ডা. আবুল হােসেন আমাদের ফুসলিয়ে তাজমহল হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে অপারেশন করার প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা থাকলেও আরাফাতকে ভুল ইনজেকশন পুস করে অজ্ঞান করেন। পরে অপারেশন করার পর আরাফতের আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। এসময় তাজমহল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ও ওই চিকিৎসক নিজেরা বাঁচার জন্য রাতেই ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে হয়রানি করেন। আমি এ হত্যাকারীদের বিচার চাই।
তাজমহল হসপিটালের ম্যানেজার মেহেদি জানান, ডা. আবুল হােসেন শিশু আরাফাতকে নিয়ে অপারেশন করতে এখানে নিয়ে আসেন। পরে বিকেলের দিকে শিশুটিকে অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর শিশুর অবস্থা খারাপ হতে থাকলে চিকিৎসক নিজেই ঢাকার কােন হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে কি হয়েছে আমি জানি না।
এ বিষয়ে শহীদ সোহরার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসােসিয়ট প্রফেসর ডা.আবুল হােসেনের সাথে তার মুঠাে ফােনে বার বার ফােন দিলেও তিনি ফােন রিসিভ করেননি।