সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙা জুয়ার আসর থেকে আটককৃত চার জুয়াড়ি বুধবার রাত ১০টায় মোবাইল কোর্টের জরিমানা পরিশোধ করে মুক্তি পেয়েছেন। অভিযোগ, মুক্তির ১৪ ঘণ্টা পার না হতেই তারা একই স্থানে আবারো জুয়ার আসর পরিচালনা করছেন।
আশাশুনি থানার সহকারি উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন গোয়ালডাঙা গ্রামের বুড়িরভিটায় জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে আসছিলেন উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মোসাদ্দেকের চেলে টিক্কা, একই গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন, ফজলু গাজীর ছেলে ফরহাদ হোসেন ও ফকরাবাদ গ্রামের চাকলা সরদারের ছেলে আঙুর, আনার, ডালিম ও রবিউল।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ টিক্কা, মনির হোসেন, ফরহাদ ও আঙুরকে আটক করে। একই দিনে শোভনালী থেকেও চারজনকে আটক করা হয়। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল কোর্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হুসাইন খান তাদের প্রত্যেককে এক হাজার ১০০ টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা পরিশোধ করে তারা রাত ১০টার দিকে মুক্তি পান।
গোয়ালডাঙা গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও সোহারাব হোসেন জানান, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গোয়ালডাঙার বুড়িরভিটায় জুয়ার আসল পরিচালিত হচ্ছিল। বামনডাঙার রবিউল ও কমপক্ষে ছয়টি মামলার আসামী আনার, গোয়ালডাঙার ডালিম ও টিক্কা ছাড়াও মনির, ফরহাদ ও আঙুর স্থানীয় প্রশাসন, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা ও স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই তারা প্রকাশ্যে তাবু টানিয়ে এ জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে আসছিলো। বিষয়টি নিয়ে গত পহেলা আগষ্ট বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই জের ধরে গত বুধবার দুপুরে টিক্কা, মনির, আঙুর ও ফরহাদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করে কয়েকজন। এজন্য দর ওঠে লাখ টাকা। অবশেষে রাত ১০টায় মোবাইল কোর্টের জরিমানা করলে তা পরিশোধ করার পর তারা মুক্তি পায়। মুক্তি পাওয়ার ১৪ ঘণ্টা না কাটতেই বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে একই স্থানে আবারো জোরে সোরে শুরু হয়েছে তিন কার্ড তাসের জুয়া। এ ঘটনায় তারা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু জানান, পুলিশ জুয়ার বোর্ড থেকে চারজনকে ধরা আনার ৯ ঘণ্টা পর মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাদেরকে জরিমানা করার বিধান নেই। কারণ মোবাইল কোর্ট নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের উপস্থিতিতে পরিচালিত হয়। যেখানে অপরাধ সংগঠিত হয় সেখানেই জেল বা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। শুধু আশাশুনিতে নয়, অন্য উপজেলায়ও এ ধরণের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারছেন।
এ ব্যাপারে বৃহষ্পতিবার বিকেল চারটার দিকে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীরের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।