খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনিতে ব্যবসায়ী আনারুল হত্যার দু’সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও পুলিশ অদ্যবধি ঘটনার মোটিভ উদঘাটন, ঘটনায় জড়িত কাউকে শনাক্ত কিংবা আটক করতে পারেনি।
গত ৯ জুলাই সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার কপিলমুনির সিলমানপুর মৌজার চরবিলের নিজ চিংড়ী ঘরের বাসা থেকে উলঙ্গ ও ঝুলন্ত অবস্থায় থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। আনারুল গোপাল গাজীর জামাতা ও সাতক্ষীরার তালার প্রসাদপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা সরদারের ছেলে। ঘটনায় পরের দিন নিহতের ভাই শাহিনুর সরদার (২৮) বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে পাইকগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার নং-১৫।
মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, তালা উপজেলার প্রসাদপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা সরদারের ছেলে আনারুল সরদার প্রায় ১৮/১৯ বছর আগে পাইকগাছার কপিলমুনি ইউনিয়নের সিলমানপুর গ্রামের গোপাল গাজীর মেয়ে নাজমা খাতুন (৩০) কে বিয়ে করে সেই থেকে শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছে। দাম্পত্য জীবনে তাদের দু’ছল ও এক মেয়ে রয়েছে।
জানাযায়, আনারুল শ্বশুর বাড়িতে থেকে বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতো। মূল ব্যবসার পাশাপাশি সে চলতি বছরের প্রথম দিক একই এলাকা সিলমানপুরের হোসন আলী গাজীর ছেলে সালাম গাজীর কাছ থেকে পার্শ্ববর্তী চরবিলের সাড়ে ৫ বিঘা জমির একটি চিংড়ী ঘের ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছিল। ঘটনার দিন ৭ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে প্রতি রাতের ন্যায় ঐ ঘের পাহারার জন্য চলে যায়। পরের দিন সকালে ঘের থেকে তার বাড়ি আসতে দেরি দেখে তার স্ত্রী নাজমা খাতুন সকাল ১০ টার দিকে ঘরের বাসায় গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তার উলঙ্গ লাশ দেখে চিৎকার দেন।
এরপর খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও সিআইডি ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধারপূর্বক সুরাতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
পারিবারিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘেরের মূল বাসার বারান্দায় আড়ায় গামছা দিয়ে আনারুলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এসময় তার দু’পা ভাঁজ করে বাসার টোংয়ের তক্তায় লাগানো ছিল। তার নাক ও কান দিয়ে রক্ত পড়ে বুক বেঁয়ে নীচে জমাট বাঁধা ছিল। পায়ের কাছে বদনায় পানি ভর্তি ছিল। এছাড়া লাশের লুঙ্গি ও জাঙ্গিয়া বাসার মধ্যৈ ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কেউ তাকে হত্যা শেষে লাশ সেখানে ঝুলিয়ে রেখে বিষয়টিকে আতহত্যা বলে চালানোর অপচেষ্টা করে। এঘটনায় নিহত আনারুলর ভাই তালার প্রসাদপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা সরদারের ছেলে শাহিনুর সরদার বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যার নং-১৫। তারিখ ১০/০৭/২০, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ একই উদ্দোশ্য পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খুন করার অপরাধ।
তবে ঘটনার প্রায় দু’সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত ঘটনার মোটিভ উদঘাটন, ঘটনায় জড়িত কাউকে সনাক্ত কিংবা আটক করতে পারেনি।
এব্যাপারে পাইকগাছা থানার ওসি (তদন্ত) মো: আশরাফুল আলম জানান,তদন্ত চলছে ময়না তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা যাচ্ছেনা।