দীর্ঘ ৪ মাস পর অবশেষে সাতক্ষীরায় বহু প্রতিক্ষিত বৃষ্টি নামলো। মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে জেলা জুড়ে প্রায় একই সময় এ বৃষ্টি শুরু হয়। চলে বিরামহীনভাবে ৪৫ মিনিট। এরপরেও থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছিলে ঘণ্টা দুয়েক। তবে কোন ঝড় না থাকায় ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
শহরের কাটিয়া এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ জানান, ডিসেম্বর মাসে শীতের মধ্যে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল। তার পর সাতক্ষীরা শহরসহ জেলায় বৃষ্টি হয়নি। কাঠফাটা রোদ ও গরম মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। আজকের বৃষ্টিতে সব তাপদাহ নিভে গেছে। খরতাপ দগ্ধ শহরে জীবনে নেমে এসেছে স্বস্তি। তিনিসহ অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজছেন বলে জানিয়েছেন।
মথুরেশপুর এলাকার আম চাষি লিয়াকত হোসেন জানান, তাপদাহে প্রচুর আম ঝরে গেছে। এই বৃষ্টিটা মাস খানেক আগে হলেও খুব উপকৃত হওয়া যেত। তবুও বলা যায়, বৃষ্টি তাপের ঝাঁঝ থেকে মুক্তি দিয়েছে।
বিনেরপোতা এলাকার হারুন সরদার জানান, বৃষ্টিতে পাটের অনেক উপকার হলো। বৃষ্টি না থাকায় পাটর চারা মরে যাচ্ছিলো। এছাড়া যাদের বারো ধান মাঠে রয়েছে, ঝড় না হওয়ায় তাদেরও কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।
গরম ডাব বিক্রি বেড়েছিল ব্যাপকভাবে। যারা রোজা আছেন, তারা ডাব কিনে বাসায় নিয়ে যেতেন। আর যারা রোজা ছিলেন না, তারা তীব্র গরমে ডাবের পানি খেয়ে স্বস্তি নিতেন।
শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের ডাব বিক্রতা আলিম হোসেন জানান, প্রতিদিন গড়ে দু’শতাধিক ডাব বিক্রি করা হয়। প্রতিটি ডাব ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রির কথা জানান তিনি।
দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় ‘সালাতুল ইসতিসকা’ আদায় করা হয়েছে। বিগত ১ সপ্তাহ সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ বৃষ্টির প্রার্থনায় নফল নামাজ আদায় করেছেন মুসুল্লিরা।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক যুলফিকার রায়হান জানান, জেলায় মঙ্গলবার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১ মি.মি.। আকাশ এখনো মেঘলা রয়েছে। যেকোন সময় আবারো বৃষ্টি হতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন তিনি।