পার্শবর্তী বরিশাল জেলার আগৈলঝড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের ছােট্ট একটি ভাঙ্গা ঘরে বসবাসকরা লক্ষ্মী রানী জীবন যুদ্ধে হার না মানা এক সাহসী নারী। যার সংসারের ৬ জনের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেওয়ার জন্য সকাল হতেই তার ব্যবসার ডালায় বাদাম, চানাচুর, চকলেট ইত্যাদি সাজিয়ে মাথায় নিয়ে গ্রামে গ্রামে পায়ে হেটে ফেরি করে লক্ষ্মী রানী। আর ফেরি করে বাদাম বিক্রি করে যে কয়েক টাকা লাভ হয় সেই টাকা দিয়েই খাবার কিনে তার অসুস্থ শতবর্ষী মা সহ নাতি-নাতনীদের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দেয় ৭৫ বছর বয়সি এই অসুস্থ বৃদ্ধা মহিলা।
এই মহিলার ঘরের অবস্থা এতোটাই খারাপ যে বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে তার শতবর্ষী ময়ের বিছানা টাও ভিজে যায়। সরকার ঘর দিচ্ছে এমন খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে হাতে-পায়ে ধরেও একটি ঘর পেলো না হতভাগা।
আর এভাবেই স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে গত ৩৫ বছর ধরে সংসার নামের ঘানি নিজের কাধে তুলে নিয়ে জীবন-মরণ যুদ্ধে হাবুডুবু খেয়ে ভবিষ্যতে কিছু পাবার আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনে চলেছেন।
এই ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মহিলা এখন বয়স বেড়ে যাওয়ার কারনে এবং শরীরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রােগ দেখা দেয়ায় সে এখন আর আগের মতাে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ফেরি করতে পারে না। তাই কখনাে কখনাে তার শতবর্ষী মা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে না খেয়েও অনাহারে দিন কাটাতে হয় ।
সাংবাদিক অংকন তালুকদার বলেন, জীবন সংগ্রামে খুঁড়িয়ে চলা এই বৃদ্ধা মহিলার ভাগ্য এতটাই খারাপ যে, এতাে দিনেও সরকারের দেওয়া বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড জোটেনি এই মহিলার কপালে। শুধু তাই নয়, শতবর্ষী মায়ের কপালেও জোটেনি কোন কার্ড। তবে সমাজ সেবা কর্মকর্তা জানান, অচিরেই তাকে বয়স্ক ভাতার আওতায় নেয়া হবে।
জীবন সংগ্রামে হার না মানলেও বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কাছে হেরে যাওয়া এই হতভাগী বৃদ্ধা মহিলার সরকারের কাছে একটাই অনুরােধ, এখন বয়সের ভারে সে আর আগের মত মানুষের বাড়ি বাড়ি ফেরি করতে পারে না। তাই যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা, মানবতার মা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি তাকে ছােট্ট একটি ঘর ও উপার্জনের জন্য একটি দোকানের ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে সেখানে বসে ব্যবসা করে হয়তাে তার অসুস্থ শতবর্ষী মা সহ পরিবারের সকলের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দিতে পারবেন। গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে মানবতার স্বার্থে বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সহিত দেখতে অনুরোধ রইলো।