সাতক্ষীরা তালা উপজেলায় ১৯৫টি মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাস্কররা। প্রতিমা তৈরিতে সৌন্দর্য, চাকচিক্য, ভিন্নতার মধ্য দিয়ে সর্বাধিক প্রশংসার অধিকার লাভ করার জন্য উপজেলার প্রতিটি মণ্ডপে চলছে প্রতিযোগিতা। খড়, কাদামাটি ও বাঁশের সাহায্যে তাদের নিজস্ব শৈল্পিক সৌন্দর্যের নিখুঁত হাতের ছোঁয়া লাগিয়ে চলছে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আকৃতিদান। দেবী দুর্গার সঙ্গে ধনের দেবী লক্ষ্মী, জ্ঞানের দেবী সরস্বতী, গণেশ, অসুর, মহিষ, কার্তিক, সিংহের মৃন্ময়সহ তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিমায় আনা হচ্ছে আধুনিকতার চমক।
পঞ্জিকা বলছে, এ বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার ৬ষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে ২৮ সেপ্টেম্বর এবং চলবে ২অক্টোবর দশমী পর্যন্ত।
তালা উপজেলার ২টি থানার অধীন ১২টি ইউনিয়নে মোট ১৯৫টি পূজামণ্ডপে এবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন ভিত্তিক ভাগে ধানদিয়া ইউনিয়নে ১৮টি, নগরঘাটা ইউনিয়নে ১০টি, সরুলিয়া ইউনিয়নে ২১টি, কুমিরা ইউনিয়নে ১৪টি, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে ১০টি, তালা সদর ইউনিয়নে ২০টি, ইসলামকাটি ইউনিয়নে ২১টি, মাগুরা ইউনিয়নে ১২টি, খলিষখালী ইউনিয়নে ১৯টি, খেশরা ইউনিয়নে ১৪টি, জালালপুর ইউনিয়নে ১৪টি ও খলিলনগর ইউনিয়নে ২২টি পূজা মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কোন কোন মন্ডপে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি সাজসজ্জার প্রস্তুতিও চলছে।
ভাস্কররা জানান, প্রতিমা তৈরিতে পৌরাণিক কাহিনীকে নানা আদলে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা চলছে। কারুকার্যতা শেষ হলে রং তুলির নিখুঁত আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে। প্রকৃত রূপ তোলা হবে নাক, কান, চোখ, মুখ ইত্যাদি দিয়ে। তবে এই কাজে পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত না হলেও দৃষ্টিনন্দন সুন্দর প্রতিমা তৈরি করতে মনের মাধুরী দিয়ে কাজ কররে যাচ্ছি।
তালা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মৃনাল কান্তি রায় ও সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র মজুমদার জানান, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রতিবারের মতো এবারও প্রশাসনের সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করছি। সরকারিভাবে যে অনুদান আসে তা অতিদ্রুতই মণ্ডপ কমিটির কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
তালা থানার ওসি মোঃ মাইনউদ্দিন ও পাটকেলঘাটা থানার ওসি শেখ শাহিনুর রহমান জানান, দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। পূজামণ্ডপগুলোয় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। এবার সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ সদস্য, র্যাব, আনসারসহ গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর নজর থাকবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে জানান তারা।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপা রানী সরকার জানান, শান্তিপুর্ণভাবে পূজা পালনের জন্য প্রশাসনেরপক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপের অনুকুলে ৫শত কেজি করে চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয় বলে জানান তিনি।