বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় নবনির্বাচিত ক্রিকেট আম্পায়ার্স কমিটির কাছে দ্বায়িত্ব হস্তান্তর  বেগম রোকেয়া দিবসে ‘অদম্য নারী’ সম্মাননায় ভূষিত হলেন শিরিনা সুলতানা জলদস্যুদের দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত আট জেলে শ্যামনগরের গাবুরাতে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কমিউনিটি সংলাপ বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ৫ আগস্ট এর পর কেউ চাঁদাবাজি করে থাকলে সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করবো : কাজী আলাউদ্দীন আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও আলোচনা সভা ১৬ বছর যারা আন্ডার গ্রাউন্ডে ছিল, ৫ আগস্টের পর তারা যেন আকাশে আলাউদ্দিনের চেরাগ তৈরি করেছে- সাতক্ষীরায় ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান তালায় কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সাথে লবি মিটিং গোপালগঞ্জে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনারের সাথে সাতক্ষীরা জামায়াত নেতাদের সাক্ষাৎ

দু’দিনেও মেরামত হয়নি আশাশুনির বিছট গ্রামের পাউবো’র ভাঙনকবলিত বেরিবাঁধ 

✍️রঘুনাথ খাঁ📝 জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক✅
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবে) বেড়িবাঁধের ভাঙন পয়েন্টে দুই দিনেও বিকল্প রিং বাঁধ নিমার্ণ করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতির ভয়াবহতা ঠেকাতে ভাঙন পয়েন্টে দ্রুত বিকল্প রিংবাঁধ নিমার্ণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও তিনি এখনও কাজ শুরু করতে পারেননি।

ফলে খোলপেটুয়া নদীর সাথে তাল মিলিয়ে ভাঙনকবলিত এলাকার আটটি গ্রামে নিয়মিত জোয়ার ভাট হচ্ছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ওইসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে সহাস্রাধিক চিংড়ি মাছের ঘের ও বোরো ধানের ক্ষেতসহ ফসলি জমি। ডুবে গেছে গ্রামগুলোর নিম্মাঞ্চলের পুকুর। পানি উঠছে বসতবাড়িতে, ভেঙ্গে পড়ছে কাঁচাঘরবাড়ি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মাছের ঘেরে নদীর লবন পানি প্রবাহের জন্য বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে তলা দিয়ে পাইপ বসানোর কারণে বাঁধের নিচের মাটি দুর্বল হয়েছিল। যে কারণে আস্তে অস্তে তলার মাটি ক্ষয়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে বেড়িবাঁধ ধসে পড়ে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল ‘২৫) বিছট গ্রমের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল, পাউবো খুলনা অঞ্চলের তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী সৈয়দ শহিদুল আলম, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২এর নিবার্হী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন, আশাশুনি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় প্রমুখ।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৯টার দিকে সরেজমিনে বিছট গ্রামের ভাঙন পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে বেড়িবাঁধের ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে প্লাবিত এলাকার পানি নামছে খোলপেটুয়া নদীতে। পানি স্রোতের সাথে ভাঙছে ল্যান্ড সাইডের ভূমি। স্থানীয় উদ্যোগে কয়েকশ মানুষ ভাঙন পয়েন্ট থেকে বেশ কিছু দূরে মাটি ও বালির বস্তা দিয়ে রিং বাঁধ নিমার্ণের চেষ্টা করেছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে মাইকিং করে জানানো হচ্ছে আগামীকাল বুধবার সকাল সাতটার মধ্যে প্রতিটি বাড়ির নারীরা বাদে পুরুষদের বাঁধ সংস্কারে অংশ নেওয়ার জন্য। এদিকে দুপুরের জোয়ার শুরু হলে ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে ফের প্রবল বেগে পানি ঢোকা শুরু করে লোকালয়ে। ফলে আরো নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভয়ে বিছট গ্রামের অনেকে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে। মাটির ঘর ভেঙে পড়া আশংকা অনেকে মালপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। মঙ্গলকবার দুপুরের জোয়ারে প্লাবিত গ্রাম গুলোর নিম্মাঞ্চলের অনেক বাড়িতে নতুন করে পানি উঠেছে। তলিয়ে গেছে অনেক মিষ্টি পানির পুকুর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিছট গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও পাউবো কতর্ৃপক্ষ এবং প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারণে ভাঙন মেরামতের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। কিভাবে কাজ শুরু করলে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধ করে একটি বিকল্প রিংবাঁধ নিমার্ণ করা যাবে সে বিষয়ে কতর্ৃপক্ষ ফলে বিডম্বনা দির্ঘায়িত হচ্ছে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষের।

বিছট গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, বিছট গ্রামের যে স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙেছে, ওই স্থানটি দীর্ঘদিন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এছাড়া মূল যে পয়েন্টটি ভেঙেছে সেখানে একটি পাইপ লাইন ও গেট সিস্টেম ছিল। মাছের ঘেরে পানি তোলার জন্য পাউবো’র বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে পাইপ বসিয়ে পানি তোলার কারণে হঠাৎ বাঁধটি ধসে যায়। দ্রুত এ বাঁধ সংস্কার করানা হলে আনুলিয়া, খাজরা, বড়দল ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের আরো ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেকা দিয়েছে।

আনুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. রুহুল কদ্দুস জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় গতকাল তাঁদের নির্ঘুম রাত কেটেছে। ঈদে তাঁর ইউনিয়নের মানুষ আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি। ইতিমধ্যে বিছট, বল্লভপুর, আনুলিয়া, চেঁচুয়া, নয়াখালি, কাকবাসিয়া গ্রামের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সম্পূর্ন প্লাবিত হয়েছে নয়াখালী গ্রাম। এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। সহাস্রাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। বোরো ধানের খেত তলিয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘর ভেঙে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৩১ মার্চ ‘২৫) সকাল পৌনে ৯ টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার পাশ থেকে প্রায় দেড়’শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ে আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট, বল্লভপুর, আনুলিয়া, নয়াখালী চেঁচুয়া ও কাকবসিয়া গ্রাম। এর মধ্যে নয়াখালী গ্রাম সম্পূর্ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বাকি গুলোর নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2020 All rights reserved
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!