গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চাঞ্চল্যকর প্রভাংশু হত্যাকাণ্ডের রহস্য দীর্ঘ ২০ বছর পর উদঘাটিত হয়েছে।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রভাংশুর পরিবারসহ কোটালীপাড়ার শতাধিক মানুষ গোপালগঞ্জ শহরের প্রেসক্লাবের সামনে হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে।
মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভিকটিমের বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস, কাকা পুলিন বিশ্বাস, ভাই হিরণ্ময় বিশ্বাস, বোন ঝুনু বিশ্বাস, ভাতিজি রিক্তা বিশ্বাস, এলাকাবাসী সাগর বিশ্বাস, সুশীল বিশ্বাস ও মৃনাল বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, আসামিরা উচ্চবিত্ত ও প্রভাবশালী হওয়ায় মামলাটিকে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছিলো।
অনেক দেরিতে হলেও চাঞ্চল্যকর এ ক্লু বিহীন হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটন করায় পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। এখন তারা আসামিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করছেন।
জানা যায়, ২০০১ সালের ১৫ মার্চ গভীর রাতে কোটালীপাড়ার সিকির বাজারে “বাংলাদেশ মেডিকেল হল” নামক ওষুধের দোকানের কর্মচারী প্রভাংশু বিশ্বাস (৩৩) হত্যাকাণ্ডের পর দিন ১৬ মার্চ তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-০৬) দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে, কোটালীপাড়া থানা, সিআইডি, পিবিআই, মুকসুদপুর সার্কেল, জুডিসিয়াল তদন্ত ও গোপালগঞ্জ সদর সার্কেল এর ৭জন তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্লুলেস হত্যা মামলাটির তদন্ত করেন। সর্বশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন পিপিএম (বার) দু’জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন এবং এ মামলার রহস্য উদঘাটন করে তিন জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের চার বছর আগে থেকেই প্রভাংশু ওই দোকানের কর্মচারী ছিলেন। কর্মচারী থাকার সুবাদে দোকান মালিক সুধীর কুমার গৌতমের বাড়িতেই তার তিন বেলা খাওয়া-দাওয়া ও আসা-যাওয়া চলত। এ সুবাদে তার সঙ্গে দোকান মালিকের স্ত্রী বা বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে দোকান মালিক সুধীর কুমার গৌতম তার বেয়াই দেবাশীষ বিশারদ ও আরেক আসামি সুশীল দাসকে নিয়ে গত ২০০১ সালের ১৫ মার্চ গভীর রাতে দোকানের মধ্যেই প্রভাংশুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কিছু ঔষধপত্র এলোমেলো ছিটিয়ে রাখে এবং অজ্ঞাত চোর বা ডাকাত তাকে হত্যা করেছে বলে প্রচার করে।