সাতক্ষীরায় পরিবেশ বান্ধব ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ও লিচেট কৃষকদের মধ্যে বিনামুল্যে দিয়ে এই সার জনপ্রিয় করার চেষ্টা চালাচ্ছে কৃষক বন্ধু সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন।
নিজে তৈরি করে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালি সার ট্রাইকো কম্পোজ সার দিচ্ছেন কৃষকদের মধ্যে। এ সার ব্যবহার করলে জমি স্বাস্থ্য ভাল থাকবে, পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না, ফসল হবে বাজার সেরা। কৃষক বন্ধু ইয়ারব হোসেন এ কাজ করছে অনেক দিন ধরে। তিনি কৃষকদের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়াতে বিনামুল্যে সার দিয়ে যাচ্ছেন। ইয়ারব হোসেন বলেন এ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত সার ও লিচেট ব্যবহারে উপকৃত হচ্ছেন কৃষকেরা। ট্রাইকো কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটির গঠন ও বুনট উন্নত করে পানি ধারণক্ষমতা বাড়ায়, পানির অপচয় রোধ করে। এ সার মাটির অম্লত্ব ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে ফসলের উৎপাদন ও গুণগত মান বাড়িয়ে কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
এ ছাড়া ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনের সময় যে লিচেট (তরলজাতীয়) সংগ্রহ করা হয়, তা বিভিন্ন সবজি ও পানের বরজে ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ ফসলের রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে করা যায়। তাই স্বল্প খরচে ও সহজ পদ্ধতিতে উৎপাদিত এ সার ও লিচেট ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুরগির বিষ্ঠা, সবজির উচ্ছিষ্ট, কচুরিপানা, কাঠের গুঁড়া, ভুট্টার ব্রান, চিটাগুড়, ছাই ও নিমপাতা এবং ট্রাইকোডারমা ছত্রাকের অণুবীজ নির্দিষ্ট অনুপাতে একত্রে মিশিয়ে তা বিশেষ উপায়ে হাউসে জাগ দিয়ে ৪০-৪৫ দিন রেখে পচনপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে কম্পোস্ট তৈরি করা হয়, তা-ই ট্রাইকো কম্পোস্ট। আর কম্পোস্ট সার তৈরির সময় হাউস থেকে নির্গত তরল নির্যাসকে ট্রাইকো লিচেট বলে।
সাতক্ষীরা সদর কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ট্রাইকো কম্পোস্ট থেকে উৎপাদিত সার ও লিচেট ব্যবহার করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। অন্য কৃষকদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিয়েছে। তাই ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদন ও লিচেট ব্যবহারে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষক বন্ধূ ইয়ারব হোসেনকে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজে এখন ভার্মি কম্পোজ সার তৈরি করেন। একই সাথে তিনি ট্রাইকো কম্পোজ সার তৈরি করেছেন। তিনি নিজের জমিতে ব্যাবহার করছেন। কৃষকদের মধ্যে এই দুই প্রকার সার ব্যাবহারে তিনি কাজ করে চলেছেন। কৃষি বিভাগ ইয়ারব হোসেনের পাশে থেকে সহযোগিতা দিয়ে যাবেন। তিনি বলেন ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদনে কৃষক দুভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রথমত, এ সার জমিতে ব্যবহার করে কৃষকেরা ভালো ফলন পাচ্ছেন। অপরদিকে ট্রাইকো লিচেট ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগবালাই দমনে তা ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কৃষকদের রোগবালাই দমনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না।