জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সোচ্চার হতে হবে।
অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের ফলে উপকূলীল এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটাকেও জলবায়ু পরিবর্তনের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে। যারা নদীর বাধ কেটে কৃষি জমিতে লবণ পানি প্রবেশ করাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রতিবছর বিভিন্ন নামে ঝড় উপকূলে আঘাত হানছে। প্রতিবছর প্রকৃতিক দুযোর্গের ফলে উপকূলীয় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সে জন্য এলাকাকে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্যোগ প্রবণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। বেড়ি বাধের সমস্যা সমাধানে আলাদা উপকূলীয় বোর্ড করে এই অঞ্চলের বেড়িবাধের সমস্যা সমাধান করতে হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সাতক্ষীরার উপকূলের নারীরা বিভিন্ন শারিরীক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভাগীয় কর্মশালায় এসব সুপারিশমালা তুলে ধরেন সাতক্ষীরা উপকূলের ক্ষতিগ্রস্তরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় সাতক্ষীরা লেকভিউতে বেলার আয়োজনে স্বদেশের পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্তের সভাপতিত্বে ও বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুলের পরিচালনায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এড. আজাদ হোসেন বেলাল, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা পুলক চক্রবর্তী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, এমএসএফের এড. মনিরউদ্দিন, ক্রিসেন্টের পরিচালক আবু জাফর সাতক্ষীরা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবুল, সুন্দরবন ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক শেখ আফজাল হোসেন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান সরদার প্রমুখ। কর্মশালার ভিজুয়াল প্রেজেন্টশন করেন অর্জন ফাউন্ডেশনের মহুয়া মঞ্জরী।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে পৃথিবীর অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছি আমরা। উন্নত দেশগুলোর কারণে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তারা বারবার আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েও বিভিন্ন তালবাহানা করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নানা সমস্যায় জর্জরিতা। প্রতিবছর ঝড় জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে, বাধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বছরের অনেকট সময় ধরে জলাবদ্ধতার মধ্যে এই এলাকার মানুষের বাস করতে হচ্ছে। এতে করে নারীরা ও শিশুরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছেন। লবণ পানিতে নারীদের জরায়ু সমস্যা পড়ছে। উপকূলের অনেক নারীর জরায়ু কেটে ফেলতে হচ্ছে। এ্যাসবেস্টসাটের চালের পানি খেয়ে অনেক মানুষ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। উপকূলের মানুষ প্রতিবছর প্রকৃতিক দুযোর্গের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে না পেরে মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের কারণে আমাদের মতো ছোট দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু তারা আমাদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বক্তরা।