সাতক্ষীরার তালা উপজেলার হাজারো চাষির রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে কারেন্ট পোকা (বাদামী গাছফড়িং)। চলতি মৌসুমে আমন ধানে এই পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। অল্প সময়ে খেতে ছড়িয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার কৃষকেরা। কিভাবে এই পোকা দমন করা যায় তা তারা বুঝতেই পারছেন না। বিপর্যয় ঠেকাতে কৃষি বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষকেরা।
তেরছি গ্রামের কৃষক শাহিনুর রহমান বলেন, ৮২ শতাংশ ধান চাষের ৩০ শতাংশ জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে।
আমতলাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শহীদুল গাজী বলেন, ৪বার স্প্রে করেও এই পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়নি ফসল। এমন সমস্যা গতবার বোরো মৌসুমেও কিছুটা হয়েছিলো কিন্তু এর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি কৃষি বিভাগ। প্রতি বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেতাম এবার কারেন্ট পোকার আক্রমণের ফলে এক বিঘা জমিতে ৫/৭ মণ ধান পাচ্ছিনা এবং অনেক জমির ধান পরিপক্ক হওয়ার আগেই কারেন্ট পোকার আক্রমণের ভয়ে কেটে ফেলতে হচ্ছে।
কৃষক আলফাজ মোড়ল, দিপকঘোষ, ইসমাইল মোড়ল বলেন, কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমাদের জমির ধান বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। কারেন্ট পোকার আক্রমণের ফলে ফসল দ্রুত কাটতে হচ্ছে। ধানের দাম সন্তোষজনক থাকলেও আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার হাজারো কৃষক।
বাগমারা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, তারা প্রত্যেকে একবিঘা করে আমন ধান চাষ করেছেন। তাদের প্রতিটি ক্ষেতেই পোকা আক্রমণ করেছে। পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হচ্ছে। তিনি তার চাষাবাদের প্রতি বিঘায় ফলন অর্ধেকের কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তবে অধিকাংশ কৃষক বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির নানান কীটনাশক ব্যবহার করে প্রতারিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
তালা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ৩শত ১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ধানে পোকার আক্রমণের ব্যাপারে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। এ সময় তাদেরকে লিফলেটসহ ফলন বৃদ্ধির ব্যাপারে পরামর্শ প্রদানও করা হয়। এবারে কিছু জমিতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হলেও অনেক ভালো ফলন হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পোকার আক্রমণ হয়েছে। শীতের আগমন হওয়াতে পোকার আক্রমণ কমে যাবে।