বিভিন্ন সরকারি কাজের টাকা আত্মসাৎ, শিক্ষক নিয়োগের নামে অর্থ বাণিজ্য, বন্যাদুর্গত মানুষের ত্রাণ ও সরকারি টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের তালতলা বাজারে বানভাষী মানুষের ব্যানারে এ কর্মসুচি পালিত হয়।
মানববন্ধন কর্মসুচি চলাকালে বক্তব্যে রাখেন প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, কোহিনুর ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এলজিএসপি, কাবিটা, কাবিখা, জলবায়ু ট্রাষ্টের গৃহ নির্মাণ প্রকল্প সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প অনিয়ম ও দূর্ণীতির মাধ্যমে গত নয় বছর কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।
করোনাকালিন সময় প্রধানমন্ত্রী প্রতাপনগর যে সরকারি অনুদান দিয়েছেন তা গরীব দূঃখীদের মাঝে না দিয়ে স্বজনপোষন করেছেন। একই বাড়িতে আড়াই হাজার টাকা করে ১০জনকে দেওয়া হয়েছে। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বরাদ্দকৃত ত্রাণের বড় অংশ ও টাকা লুটপাট করেছেন চেয়ারম্যান। আড়াই হাজার টাকা বরাদ্দের অনেকের টাকা মোবাইল নম্বর পরিবর্তণ করে জাকির হোসেন ও তার সহযোগীরা আত্মসাৎ করেছেন। বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধি ভাতার ২০১৬ সালের নতুন বই এর পাতা ছিঁড়ে সাত লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৩৫৭ জন ভিজিডি কার্ডধাারীদের প্রত্যকের কাছ থেকে মাথাপিছু ২৫০ টাকা করে নিয়ে ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চাউল উত্তোলনের জন্য বেআইনিভাবে মাথাপিছু ৫০ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। নিজে এসএসসি পাশ হয়েও নিয়মবহির্ভুতভাবে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্টানের সভাপতি হয়ে গত নয় বছর শিক্ষক ও কর্মচারি নিয়োগ, এমপিও বাণিজ্যের নাম করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন জাকির চেয়ার ম্যান। দুটি অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য একটির বাবদ নয় লক্ষ টাকার যে আয়কর সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন সেটি জাল। চৌকিদার ইব্রাহীম ও তার ভাই মুকুল গাজীর মাধ্যমে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের নামে মাথাপিছু দু’ হাজার ৩০০ টাকা নিয়ে ২০ লক্ষাধিক টাকা পকটস্থ করেছেন জাকির। অনিয়ম ও দূর্ণীতির মাধ্যমে আয়করা বিপুল অংকের টাকা দিয়ে চেয়ারম্যান প্রতাপনগর এক কোটি টাকা ব্যায়ে এসি বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের পাশে ৫০ লাখ টাকার জমি স্ত্রীর নামে, কয়রায় শ্বশুরবাড়ি এলাকায় কয়েক বিঘা জমি কিনেছেন স্ত্রীর নামে। কল্যানপুরের মাছের ঘেরে দোতলা ভবন রয়েছে তার। এ ছাড়া চাকলা, পূর্ব নাকনা ও মাদারবাড়িয়ায় কয়েক’শ বিঘার চিংড়ি ঘের রয়েছেন তার। দু’টি প্রাইভেট কার, দু’টি মোটর সাইকেল ছাড়াও স্বনামে, বেনামে ব্যাংক তিন কোটি টাকা রয়েছে পৈতৃক সূত্রে তিন বিঘা জমির মালিক জাকির হোসেনের। এ নিয়ে দুদক, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও এখনো কোন তদন্ত শুরু হয়নি। কমপক্ষে হাফ ডজন নাশকতা মামলার আসামী শিবির নেতা সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে নাম পরিবর্তণ করে ছাত্রলীগ পরিচয় বহনকারি নাহিদকে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে ব্যবহার করেছেন জাকির হোসেন। এ ছাড়া এক সময়কার সাঈদী মুক্ত মঞ্চ পরিচালনাকারিদের আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পদে বসিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন জাকির হোসেন। তার বিরুদ্ধে লাগামহীন দূর্ণীতির তদন্ত ও অবিলম্বে তাকে চেয়ারম্যান ও ইউনিয়নের দলীয় সভাপতির পদ থেকে অপসারনের দাবি জানান তারা।