সাতক্ষীরায় মাদকাসক্ত স্বামীকে যৌতুকের অর্থ দিতে না পারায় স্ত্রীকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেওয়া এবং শ্যালকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদকের অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সন্ধায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা সদরের নলকুড়া গ্রামের মৃত আশরাফ হোসেনের কন্যা জেসমিন নাহার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ২০১৫ সালে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক কাশেমপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র শাহিনুর রহমানের সাথে বিবাহ হয়। বিবাহের পর ধীরে ধীরে জানতে পারি আমার স্বামী শাহিনুর রহমান একজন চিহ্নিত মাদক সেবী। মাদক সেবনের টাকার জোগাড় করতে না পেরে আমাকে প্রায়ই মারপিট করতে থাকে। এমনকি তার মারপিট নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে ভাইদের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে তার হাতে তুলে দিতে বাধ্য হই। ভাবছিলাম সে ভালো হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে তার ঔরশে আমার গর্ভে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নেশাগ্রস্ত হয়ে ওই শিশু সন্তানকেও মারপিট করতে থাকে। আমার ননদ দেবনগর গ্রামের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী বিলকিছও তার ভাইয়ের সাথে যোগসাজস করে আমার মারপিটসহ অত্যাচার করে। ননদ বিলকিছ অত্যান্ত হিংস্র প্রকৃতির। সে তার স্বামীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়ছিল। সে প্রায়ই বলে আমি আমার স্বামীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলাম তাকেও মেরে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবো। এদিকে আমার ভাইদের কাছ থেকে টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণের গহনাসহ প্রায় ৩লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যাই ওই বাড়িতে। তার মাদক সেবনের বাঁধা দেওয়া এবং তাকে নিয়ন্রণের জন্য তার পিতা-মাতাকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। উল্টো তারা পিতা রহমান, মাতা ফজিলা বেগম আমার স্বামী শাহিনুর রহমানকে মাদক সেবনে সহযোগিতা করে। সম্প্রতি ইজিবাইক ক্রয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকা বাপের বাড়ি থেকে এনে দিতে বলে। আমি ভাইদের হাতে পায়ে ধরে ৫০ হাজার এনে দিয়। কিন্তু ইজিবাইক চালিয়ে যা উপার্জন করে তা দিয়ে মাদক সেবন করে আমাকে মারপিট করতে থাকে।
গত ২৮ আগস্ট আমার স্বামী শাহিনুর, শাশুড়ি ফজিলা বেগম ও ননদ বিলকিছ আমাকে মেরে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে এবিষয়ে আমার দুই ভাই জাহাঙ্গীর ও জাকির আমাকে তাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্ক জানতে তাদের বাড়িতে গেলে তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিটের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আমার দুই ভাইকে মাদকের সাথে জড়িয়ে এমনকি আমাকেও মাদকের সাথে জড়িয়ে মিথ্যা ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলন করে। যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। আমি কখনো আমার শ্বাশুর শ্বাশুড়িকে মারপিট করিনি বা আমার ভায়রা কখন মাদকের সাথে জড়িত ছিলো না বর্তমানও নেই। সংবাদ সম্মেলনে সে আমাকে তালাক দিয়েছে মর্মে উল্লেখ করেছে। কিন্তু তালাকের কোন কপি আমি পাইনি। আমি বর্তমানে আমার ২ বছরর সন্তানকে নিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমি আমার স্বামীর সাথে থাকতে চাই। তার ভাইদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা এবং যাতে পুত্র সন্তানকে নিয়ে স্বামীর সাথে ঘরসংসার করতে পারি তার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
বি:দ্র: প্রতিবেদনটি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ইমেইল থেকে প্রেরণকৃত।