সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙন ও জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষার দাবীতে ১০ হাজার ৮৮৭ জনের গণস্বাক্ষরসহ প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুই ঘন্টাব্যাপি অবস্থান সমাবেশ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উক্ত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।
সমাবেশের বক্তারা বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর সাতক্ষীরাসহ উপকূলের মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। এখনো অনেক স্থানে মানুষের বাড়ি ঘর রাস্তা-ঘাট জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হচ্ছে। হাটু পানি-কোমর পানিতে বসবাস করছে সাতক্ষীরা শহরের বদ্দিপুর, ইটাগাছা, কাটিয়া মাঠপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু সমস্যা সমাধানে সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও তা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে তেমন কোন কাজে আসছে না।
বক্তারা বলেন, ইতোমধ্যো কপোতাক্ষ নদ খনন ৫৩১ কোটি টাকার দ্বিতীয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা শহর ও পাশ্ববর্তী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ৪৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শ্যামনগর, আশাশুনি ও কয়রা এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বরাবর প্রেরণকৃত স্মরকলিপিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদী ভাঙন ও জলাবন্ধতা কবলিত উপকূলীয় এলাকাকে ‘দুর্যোগ প্রবন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা, এই এলাকার উন্নয়ন পৃথক অথরিটি গঠন, দুর্যোগর কারণে ব্যাপকহারে অভিবাসন বন্ধ করতে বিশেষ বরাদ্দ ও অর্থনৈতিক প্রকল্প গ্রহণ, জলাবদ্ধ ও ভাঙন কবলিত এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য স্থায়ী রেশনের ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী, মজবুত ও টেকসই বেড়িবাঁধ পুন:নির্মাণ, সামগ্রীক উন্নয়ন অংশিদার সুনির্দিষ্ট এসডিজি অর্জন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গৃহীত ডেল্টা ও ব্লু প্লানের আওতায় টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ স্থানীয় জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবী জানানো হয়। স্মারকলিপিতে জলাবদ্ধতার হাত থেকে সাতক্ষীরা শহর বাঁচাতে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা, জেলার সকল নদী-খালের জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক প্রবাহ যতদূর সম্ভব পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সকল বাঁধা অপসারণ, সিএস ম্যাপ অনুযায়ী নদী-খালের সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, সাতক্ষীরা শহরের মধ্যেদিয়ে প্রবাহিত প্রাণ সায়ের খালের স্বাভাবিক প্রবাহ চালু ও বেতনা ও মরিচাপের সাথে সংযুক্ত করা এবং নদী খালের নেট-পাটা অপসারণ করার দাবীসহ সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়ন ২১ দফা দাবী জানানো হয়।
জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে অবস্থান সমাবেশে বক্তোব্য রাখেন, অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ, এড. আবুল কালাম আজাদ, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, সুধাংশু শেখর সরকার, বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিকী, আনোয়ার জাহিদ তপন, ওবায়দুস সুলতান বাবলু, অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, কমরেড আবুল হোসেন, নিত্যানন্দ সরকার প্রমুখ।