সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ তৌহিদুর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক। রবিবার দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশীটভুক্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ তৌহিদুর রহমান, সিভিল সার্জন অফিসর সাবেক হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন, স্টোর কিপার এ.কে.এম ফজলুল হক, ঢাকার তোপখানা রোড সেগুন বাগিচার মেসার্স বেঙ্গল সোয়টিফিক এন্ড সার্জিক্যাল কোম্পানীর স্বত্ত্বাধিকারী জোহর উদ্দিন সরকার, নয়াপল্টনের মেসার্স মাকটাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী ও অংশিদার আব্দুর ছাত্তার সরকার, একই এলাকার , মেসার্স মাকটাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী ও অংশিদার আহসান হাবিব, ইউনিভার্সাল ট্রেড কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী আসাদুর রহমান, মেসার্স মাকটাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার কাজী আবু বকর সিদ্দীক ও মহাখালী নিমিউ এন্ড টিসির অবসর প্রাপ্ত সহকারী প্রৌকশলী এ.এইচ.এম আব্দুস কুদ্দুস।
তদন্ত অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিগণ অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশ অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গে করে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক চিকিৎসা সংক্রান্ত মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে তিনটি বিলের বিপরীতে মোট ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা সাতক্ষীরা হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে সরকারের আর্থিক ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। তাই আসামিদের বিরুদ্ধে দ্বন্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৯/ ১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে (দুদক, সজকা, খুলনার (সাতক্ষীরা)। এর আগে দুদকের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক ও বর্তমান সহকারী পরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন দুদকের অনুমোদন সাপেক্ষে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা সম্বনিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে রবিবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদক।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রায় ১৭ কোটি টাকার মালামাল ক্রয় দুর্নীতির ঘটনায় গণমাধ্যমে ওই সময় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ সাতক্ষীরা উক্ত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ গ্রেপ্তারর দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করে। এরপর গত ২৪ এপ্রিল ২০১৯ তারিখ সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর ওই বছর ৯ জুলাই দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।