গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ৭ নং উরফি ইউনিয়ের ডুমদিয়া গ্রামের রাস্তার গাছ কেটে নিয়ে চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে প্রতিবেশী ইবাদত গাজী। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সংশয় ও ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐ এলাকার গাজী বাড়ির সামনে রাস্তা থেকে ৩/৪টি চারাগাছ সহ কয়েকটি গাছ কেটে নিয়ে যায় জলিল গাজীর ছেলে ইবাদত গাজী। এলাকার লোক বাধাঁ দিলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয় সে। গাছ কাটার সময় ওই গ্রামের ইমদাদ গাজী বাধাঁ দিলে তাকে নানা ভাবে হুমকি দেয় সে। পরে বিষয়টি স্থানীয় ভুমি অফিসে অভিযোগ করেন ইমদাদ গাজী। এ কারনে ইবাদত গাজী বাদী হয়ে ইমদাদ গাজী ও তার অসুস্থ পিতা অছিকুর রহমান (৭০) এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ওই এলাকার আরো ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে ইবাদত গাজীর বিরুদ্ধে ।
ভুক্তভোগী এমদাদ গাজী বলেন, ইবাদত গাজী আমাদের প্রতিবেশি এবং সর্ম্পকে চাচতো ভাই। সে গত মাসে আমাদের বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে কয়েকজন লোক নিয়ে বেশ কয়েকটি গাছ কেটেছে এবং সেখানে তিনি পানির ট্যাঙ্ক করার জন্য কাজ করছেন। সরকারি রাস্তার গাছ কাটছেন কেন? এ কথা বলার পর সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরবর্তীতে আমি বিষয়টি ইউনিয়ন ভুমি অফিসে জানাই। গত রোববার (৩০ আগষ্ট) আমি এবং আমার বাবার নামে আদালত থেকে সমন এসেছে তারপর আমরা জানতে পারলাম ইবাদত গাজী আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আমরা এই মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা থেকে রেহাই চাই ।
ওই গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুল সাত্তার (চুন্নু) গাজী (৭১) বলেন, ইবাদত ও তার স্ত্রী মামলাবাজ। বিগত ১০-১২ বছর যাবৎ এলাকার অনেক লোকের বিরুদ্ধে সে মামলা করেছে। আবার টাকার বিনিময়ে মামলা মিটিয়ে ফেলেছে। তাকে এলাকার লোক এখন মামলাবাজ নামেই জানে।
ওই গ্রামের হাফেজ মনির গাজীর স্ত্রী শিখা বেগম (৪০) বলেন, আমার জায়গা থেকে পানি তার গায়ে ছিটে যাওয়ার কারনে সে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা দিয়েছিলো। পরে আমরা সাত হাজার টাকা দিয়ে তার সাথে মিমাংসা করি।
বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উরফি ইউনিয়নের ডুমদিয়া উত্তরপাড়ার গাজী বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোঃ ইমদাদ গাজী।
এ সময় স্বাস্থ্য বিধি মেনে ওলিয়ার রহমান (বাচ্চু গাজী), লিয়াকত আলী খান, দাউদ উর রহমান (মিন্টু) গাজী, আশরাফ শরীফ, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শেখ মিজানুর রহমান সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন ।
এ বিষয়ে ডুমদিয়া ইউনিয়নের সহকারী ভুমি কর্মকর্তা কাজী ফজলুল হক বলেন, গাছকাটা ও সরকারি জায়গায় কাজ করার একটা অভিযোগ এসেছিলো। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সেখানে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সার্ভেয়ার এনে ওই জায়গা পরিমাপ করে তারপর আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয় ইবাদত গাজীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে কথা গুলো উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে পূর্ব থেকে তারা অত্যাচার করে আসছে । যা গ্রামবাসীর সাথে কথা বললে আপনারা জানতে পারবেন।