মেজর সিনহা হত্যার অন্যতম আসামী টেকনাফের তৎকালীন ওসি প্রদীপের নির্মম নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার চিকিৎসার সহযোগিতার জন্য সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবিদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আহমেদ আবু জাফর একজন সাংবাদিকের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
ফরিদুল মোস্তফা দীর্ঘ ১১ মাস ৫দিন কারাভোগের পর ২৮ আগস্ট অসুস্থ অবস্থায় জামিনে মুক্ত হন। জামিনের পর তিনি এখন কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন, নয়তো চোখ দুটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া তার কিডনী এবং নিউরো সমস্যাও জটিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ওসি প্রদীপের পক্ষের লোকজনের দায়েরকৃত ৬টি মামলার যাতাকলে পিষ্ট ফরিদুল মোস্তফার জীবন আজ দূর্বিসহ।
জনশ্রুতি রয়েছে, ফরিদুল মোস্তফা গ্রেফতারের পর স্থানীয় অধিকাংশ সাংবাদিকরা ওসি প্রদীপের দালালিতে ব্যস্ত ছিলেন। ফলে স্থানীয় অধিকাংশ পত্রিকার সম্পাদক, সাংবাদিকরা তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেন। এমনকি কম্পিউটার অপারেটররা তার পত্রিকায় কাজ করবেনা এবং হকাররা তার পত্রিকা বিক্রি করবেনা মর্মেও ইতিপূর্বে রেজুলিউশন করা হয় বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন। তবে যেসকল রাক্ষুসে সাংবাদিক দালাল ফরিদুল মোস্তফার বিরোধীতা করে ওসি প্রদীপের পক্ষ নিয়ে কাজ করেছিল তারা দুদকসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজরদারিতে রয়েছেন।
দীর্ঘদিন পর তাকে আইনি সহযোগিতা দিতে পাশে দাঁড়ান সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম। গত ১১ আগস্ট ফরিদুল মোস্তফার ওপর নির্যাতন সংক্রান্ত ঘটনা জানতে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আহমেদ আবু জাফরের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিন পরিদর্শন করেন। দুদিন ব্যাপী এ টিমের নেতৃবৃন্দ স্থানীয় সাংবাদিক, রাজনৈতিক,আইনজীবি ও সুশীল সমাজ নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে মতামত গ্রহন করেন। শীঘ্রই টিমের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে ওসি প্রদীপের দ্বারা বর্বর নির্যাতনের শিকার ফরিদুল মোস্তফা শারীরিক ভাবে চরম অসুস্থ। নির্যাতনের ক্ষত শুকাতে তার এখন উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন আর্থিক সহযোগিতা।
ফরিদুল মোস্তফা জানিয়েছেন, শেষ সম্বল টেকনাফের বসত ভিটেটুকু বিক্রি করে মামলা পরিচালনায় খরচ হয়ে গেছে বহু আগে। তিনটি শিশু সন্তান নিয়ে মোস্তফার চোখেমুখে এখন হতাশার ছায়া। তিনি পেছেনের সকল গ্লানি কাটিয়ে আবারো কলম ধরতে চান সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে। তবে সৃষ্টির সকল প্রাণীকুলের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা তৈরী হয়েছে কারাবন্দী সময়ে।
ফরিদুল মোস্তফার জন্য এখনি প্রয়োজন সরকারী উদ্যোগ। তবে পুলিশি নির্যাতন ও মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক গায়েবী মামলায় আজ গৃহহীন অসুস্থ সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পাশে সকলের দাঁড়ানো উচিত। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম(বিএমএসএফ) ও সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা তহবিল গঠন করা হয়েছে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আপনার সামর্থ অনুযায়ী সহযোগিতার অর্থ উল্লেখিত পার্সোনাল বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে পারবেন। সহায়তা প্রদানকারী ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হবে। বিস্তারিত জানতে বিএমএসএফ’র সাধারণ সম্পাদকের ০১৭১২৩০৬৫০১ নাম্বারে কল করতে পারেন।
ফরিদুল মোস্তফার চিকিৎসার জন্য যারা সহযোগিতা করতে চান তারা নিম্মোক্ত বিকাশ নম্বরে যোগাযোগ করে অর্থ সহায়তা করতে যোগাযোগ করুন জুয়েল খন্দকার বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় সদস্য ০১৮৪৪৬৭০৪২২, সোহাগ আরেফিন বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় সদস্য ০১৩০৬৭৩৩৮০২, আরিফুল মাসুম বিএমএসএফ সহযোগী সদস্য ০১৭১৫০৬৫৫৩৩, মিজানুর রশীদ মিজান সভাপতি বিএমএসএফ কক্সবাজার জেলা শাখা ০১৮১৫৬০৩৪০৬।
আগামি ১২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে উত্তোলনকৃত অর্থ সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার হাতে তুলে দেয়া হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।