স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সাতক্ষীরা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার অনেক বধ্যভূমি সংরক্ষিত হয়নি। ওইসব স্থানে নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ। জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় বারবার আবেদন ও স্মারকলিপি দেওয়ার পরেও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে দীনেশ কর্মকারের জমিতে নির্মিত হয়নি স্মৃতিস্তম্ভ। অথচ ওই বধ্যভূমির জায়গা একটি মহল কৌশলে দখল করে নেওয়ার কাজ অব্যহত রেখেছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। মুক্তিযুদ্ধের সরকারের সময় যদি এ কাজ শুরু না করা যায় তাহলে আগামিতে সাতক্ষীরার কোন বধ্যভূমির অস্বিত্ব থাকবে না। তাই দীনেশ কর্মকারের জমিতে আগামি ২৪ মার্চের মধ্যে বধ্যভূমি নির্মিত না হলে পরদিন ’৭১এর বধ্যভূমি সংরক্ষণ কমিটি সকলকে নিয়ে ২৫ মার্চ সকাল থেকে সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করবে। এ কাজে কোন বাঁধা আসলে দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
শনিবার বিকল ৫টায় সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনে দীনেশ কর্মকারের জমিতে থাকা বধ্যভূমিতে ’৭১এর বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কমিটি আয়োজিত এক বিশেষ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা আরো বলনে, আশাশুনির বুধহাটা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে ১৯৪৮ সালে সোচ্চার হন। একপর্যায়ে পাক সেনারা তাকে খুলনার হাদিস পার্ক থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। পরে তাকে আবারো ধরে নিয়ে ডিটেনশান দিয়ে নির্যাতন করা হয়। ১৯৪৯ সালে তাকে রাজশাহী কারাগারের খোপড়া ওয়ার্ডৈ রাখা হয়। পাক জান্তরা তাকেসহ সাতজন কারাবন্দিকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। ওই সাতজনের মধ্যে আনোয়ার হোসেনই ছিলেন একজন ভাষা আন্দোলনের সৈনিক। তার মৃত্যুর ৭২ বছর পরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাকে অবিলম্বে বাংলাদেশের প্রথম ভাষা শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
’৭১এর বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সুভাষ সরকারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্যে দেন সংগঠণের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ কুমার সরকার, দৈনিক দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষযক সম্পাদক ও জজ কোর্টের সাবেক পিপি অ্যাড. ওসমান গণি, স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ, জেলা বাসদের সমন্বয়ক নিত্যানন্দ সরকার, জাসদ নেতা প্রভাষক ইদ্রিস আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা স্বপন কুমার শীল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক কাজী আক্তার হোসেন, জেলা সৈনিক লীগের সভাপতি মাহমুদ আলী সুমন, বিশিষ্ঠ কবি ও লেখক গাজী শাহজাহান সিরাজ, মন্ময় মনির ও বিপবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মুনসুর রহমান প্রমুখ।