গোপালগঞ্জে শোকসভা, দোয়া মাহফিল ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
প্রতি বছর এই দিনে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা, বাংলাদেশ আ.লীগের সভাপতি ও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বাবার কবর জিয়ারত করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন।
দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার টুঙ্গিপাড়ায় আসেননি মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর স্বজনেরা। সীমিত পরিসরে এ বছর জাতীয় শোক দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পক্ষে শনিবার (১৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী বিএসপি (বার), এনডিসি, পিএসসি।
এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করেন। বেজে ওঠে বিউগলের করুন সুর। এরপরে তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে.কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি-র নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আ.লীগের পক্ষে বঙ্গবন্ধু’র প্রতি শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় আ.লীগ নেতৃবৃন্দ।
এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাহজাহান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএএ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার) পিপিএম (বার), গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান পিপিএম (বার), জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান, জেলায় কর্মরত সকল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ, গোপালগঞ্জ জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন সেখ, শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু, সিকদার মোহাম্মদ দুলু, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো.বাবুল শেখ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইলিয়াছ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর আ.লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, সাধারণ সম্পাদক মো. ফোরকান বিশ্বাস সহ জেলা-উপজেলা-পৌর আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষকে শ্রদ্ধা জানাতে বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাংলাদেশ আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে.কর্ণেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেসব খুনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশে ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে পালিয়ে রয়েছে। তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। যে দেশে পালিয়ে আছে সে দেশের সরকারের সাথে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার পিছনে জিয়াউর রহমান জড়িত। তাই দেশের মানুষ জিয়াউর রহমানকে ঘৃনা ভরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আজকে একটি কালো দিন। আজকের দিনে ঘাতকেরা জাতির পিতাসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিলো।
এরপর বেলা ১১টায় সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মাহফিলেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা টাঙ্গানো হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারে নিহত স্বজনদের নামে তোরণ।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শোক দিবসকে কেন্দ্র করে শোকসভা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সহ তাঁর পরিবারে নিহত সকল সদস্যের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয় এবং রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ও উদ্যোগে এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।