জমির ছয় লাখ হারির টাকা না দেওয়ায় চাচার দায়েরকৃত মামলায় জেল খাটছেন ভাতিজা সুমালেশ মন্ডল। আপোষের শর্তে জামিন না নিয়ে তা না মানায় গত রবিবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল তার জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামী সুমালেশ মন্ডল সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের চাঁদখালি গ্রামের পরান মন্ডলের ছেলে।
চাঁদখালি গ্রামের মৃত কেশব চন্দ্র মন্ডলের ছেলে ও উজিরপুর বাজারের ব্যবসায়ি আশুতোষ মন্ডল জানান, তার বড় ভাই পরান মন্ডলের ছেলে সুমালেশ মন্ডল (৪৬) তার ২৫ বিঘা জমিতে মাছ চাষ করার জন্য বিঘা প্রতি ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করে ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হন। ২০১৭ সাল ও ২০১৮ সাল পর্যন্ত আংশিক হারির টাকা ও ২০১৯ সালের বাবদ তিন লাখ টাকা না দেওয়ায় তিনি টাকা পরিশোধের জন্য ভাইপোকে বারবার তাগিদ দেন। এরপরও সে গায়ের জোরে মাছ চাষ অব্যহত রেখে জমি ছেড়ে না দেওয়ার হুমকি দেয় সুমালশ। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি সুমালেশ তাকে ও তার ছেলে কিশোর কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মিথ্যা একটি মামলা (১০নং) দিয়ে তাদেরকে বাড়ি ছাড়া করে। একপর্যায়ে স জমি দখল রেখে মাছ চাষ করায় গত বছরের ৩০ জুন টাকা চাইতে গেলে তাকে আবারো বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে তিনি গত বছরের ৩১ আগষ্ট সুমালেশ এর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার আমলী আদালত-২ এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইন গত বছরের ২০ ডিসেম্বর অভিযোগের স্বপক্ষে সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আদালতে সুমালেশ এর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে ৪২০/৪০৬ ধারায় সমন জারির (সিআর-২৫০/২০ কালী) নির্দেশ দেন। চলতি বছরের ১৮ মার্চ সুমালেশ টাকা পরিশোধ করার শর্তে আদালত থেকে জামিন মুক্তি পান। এরপর সে টাকা পরিশোধ না করায় আদালতে সুমালেশকে তার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মামলার উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে আপোষনামা করে ২১ অক্টোবর আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন সুমালেশকে। সুমালেশ বর্তমান ইউপি সদস্যকে বাদ দিয়ে সাবেক এক ইউপি সদস্য কার্তিক দাস এর মাধ্যমে এক মনগড়া আপোষনামা করে আদালতে উপস্থাপন করে। বাদি পক্ষের আইনজীবী এত আপত্তি করায় আদালত তাকে আবারো যথাযথ আপোষনামা জমা দিতে বলেন। আপোষনামা জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ও চলমান সময় পর্যন্ত বকেয়া ১০ লাখ টাকা পরিশোধের ব্যাপারে যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় গত রবিবার সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম বিলাস কুমার মন্ডল তার জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. ইউনুছ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।