“মৃত্যুর আগে আর হয়তো বা নিজের কোন জায়গায় স্থায়ী ভাবে ঘর নির্মাণ করতে পারবো না, পাবো না হয়তো সরকারি কোন সুবিধা। নিজের বলতে যেহেতু আমার কোন জায়গা জমি কিছুই নেই, সেহেতু আমার মৃত্যুর পর আমাকে যেন নদীতে ফেলে দেওয়া না হয়, অবশ্যই যেন মাটিতে দাফন করা হয়। সেটা সরকারি কবরস্থান হলেও চলবে”।
এমনভাবে কাঁদতে কাঁদতে হৃদয় বিদারক এ কথা গুলো বললেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুল্যা গ্রামের ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুল জব্বার। পেশায় তিনি একজন শ্রমিক। তিনি কুল্যা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা। দীর্ঘ প্রায় ৩৫ বছর যাবত ওই গ্রামের বিভিন্ন মানুষের বাড়ীর আঙ্গিনায় কুড়ে ঘর বেঁধে তিনি বসবাস করে আসছেন। তার নিজের বলতে কিছুই নাই। তিনি একজন প্রকৃত অসহায় ভূমিহীন হলেও তার নামে নেই কোন বয়স্ক ভাতার কার্ড, নেই ভিজিডি কার্ড, নেই ভূমিহীন তালিকায় নাম, এমনকি কয়েক যুগ ধরে মানুষের বাগানে বনবাসী হয় অস্থায়ী ভাবে বসবাস করলেও ভাগ্য মেলেনি এক টুকরো সরকারি জমি বা একটি সরকারি ঘর। তিনি সরকারি সকল সুবিধা বঞ্চিত হয়েও পরিশ্রম করে জীবন যাপন করে চলেছেন। তিনি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটা থেকে শুরু করে দো-চালা ঘর নির্মানের কাজ করে থাকেন। অথচ আজ পর্যন্ত কোন সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ের কোন সংস্থা বা ব্যক্তি উদ্যোগে তিনি পাননি কোন সাহায্য। তাই জীবন সায়াহ্ন এসে তার একটাই আকুতি তার মৃত্যুর পর তার মরদেহ যেন নদীতে না ফেলে এক টুকরো জমিতে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।