করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে এক পুলিশ সদস্য ও এক পৌর কর্মীসহ ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত ৪৬৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে তারা মারা যান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশদহা গ্রামের মৃত মহিবুর রহমানের ছেলে কৃষক বেলাল হোসেন (৫৫) ও শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মৃত রমজান আলীর ছেলে গোলাম ইছাহাক (৯০) ও শহরের মুন্সিপাড়ার গহর আলীর ছেলে ইব্রাহীম হোসন (৬০)।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ রফিকুল ইসলাম জানান, গত ১২ জুলাই জ্বর ও শ্বাসকষ্টে নিয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন কৃষক বেলাল হোসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোর চারটার দিকে যান তিনি মারা যান।
এর আগে গত ১৩ জুলাই তার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হলেও রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
এদিকে, গত ১৫ জুলাই জ্বর ও শ্বাস কষ্ট নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি হন বৃদ্ধ গোলাম ইছাহাক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে তিনিও মারা যান। গত ১৬ জুলাই তারও নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হলেও রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে, শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি হন শহরের মুন্সিপাড়ার ইব্রাহীম হোসেন। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়ার পর তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে তাদের লাশ দাফনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে।
এনিয়ে সাতক্ষীরায় করোনার উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত মারা গেছেন মোট ৩২ জন। আর জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরো ১০ জন।
অপরদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে এক পুলিশ সদস্য ও এক পৌর কর্মীসহ ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত ৪৬৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
শুক্রবার পিসিআর ল্যাব থেকে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট উক্ত ১৯ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরার স্বাস্থ্য বিভাগ।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জয়ন্ত সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার পর্যন্ত এ জেলা থেকে মোট ৩ হাজার ১৬১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাব পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে ২ হাজার ২২৩ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ৪৬৮ জন করোনা পজিটিভ ও বাকীদের সব নেগাটভ রিপোর্ট এসেছে।
তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লক ডাউন করে লাল পতাকা টানানো হয়েছে।