
দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা গোলাম হোসেন নামের এক চিংড়ি চাষিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর ‘২৫) সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের জাবাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ নয়জনকে আটক করেছে।
নিহত গোলাম হোসেন (৬০) শ্যামনগর উপজেলার জাবাখালি গ্রামেট মৃত হামিজ উদ্দীন মোড়লের ছেলে।
আটককৃতরা হলেন, জাবাখালি গ্রামের এমান আলী মোড়লের ছেলে আত্মসমর্পণকৃত বনদস্যু সেলিম মোড়ল (৫০), তার ভাই সাইফুল মোড়ল (৩৫), ও ফারুক মোড়ল (৩২), বদর উদ্দিন মোড়লের ছেলে রেজাউল মোড়ল (৪০), রেজাউলের স্ত্রী মাছুমা বেগম (৩৫), সেলিম মোড়লের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), সাইফুল মোড়লের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৩০), ফারুক মোড়লের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৩০) ও এমান আলীর স্ত্রী সফুরা বেগম (৬৫)। অভিযুক্তদের আটকের পর উত্তেজিত জনতা ঘরবাড়ি ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের ছেলে হাফিজুর রহমান জানান, তাদের দীর্ঘদিনের পায়ে চলা রাস্তা সম্প্রতি বন্ধ করে দেয় প্রতিবেশী ইমান আলী মোড়ল ও তার পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি নিয়ে তার বাবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করায় প্রতিপক্ষ সংক্ষুব্ধ হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে তার পিতা বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বাদানুবাদে জড়ায়। এক পর্যায়ে এমান আলীর ছেলে সাইফুল, ফরুক, সেলিম ও বদরুদ্দীনের ছেলে রেজাউল ধারালো অস্ত্র ও ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার পিতাকে জখম করে। দ্রুত শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করে।
নিহতের বন্ধু আব্দুর রশিদের ভাষ্য চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেয়া হলেও এমান আলী ও তার লোকজন নির্ধারিত দিনে পরিষদে অনুপস্থিত ছিল। বিষয়টি নিয়ে গোলাম হোসেন প্রশাসনের দারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছিল। সে ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজন আত্মসমপর্নকৃত বনদস্যু সিরাজুলের ভাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত ডাঃ সাকির হোসেন জানান, নিহতের পিঠ, বুক, কাঁধসহ শরীরের চারটি স্থানে ছুরিকাঘাত ও কোপের চিহ্ন মিলেছে। ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করারও প্রমান মিলেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) পিয়ার উদ্দীন জানান, হত্যাকান্ডের পরপরই স্থানীয়রা অপরাধীদের ধাওয়া করে একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে ফেলে। ঘটনাস্থল থেকে নয়জনকে আটকের পাশাপাশি হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরিসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদী উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলমান।