সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কাশিয়ানী উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র সরেজমিন পরিদর্শনে নবাগত ডিসি আরিফ -উজ-জামান শ্যামনগরের গাবুরাতে অভিযোজন কৃষি চর্চা বাড়াতে কৃষি ফসল ও সবজি চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেবহাটায় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে কম্বল বিতরণ আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নকে মডেল ইউনিয়ন উপহার দেবো: কাজী আলাউদ্দীন দ্বীন প্রতিষ্ঠায় নারীদেরকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে- মুহাঃ আব্দুল খালেক মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা মু ক্তি প ণে র দা বি তে সুন্দরবনের ৭ জে লে কে অ প হ র ণ তালায় অর্ধবার্ষিক লবি সভা অনুষ্ঠিত হ্যাচারি পরিচালনায় দক্ষতা বৃদ্ধি ও মানসম্মত পোনা উৎপাদনের লক্ষ্য অর্জন বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা শ্রিম্প হ্যাচারি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সেব এর উদ্যোগে সাতক্ষীরায় মতবিনিময় সভা সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আরেফিন জুয়েলের মতবিনিময়

মৎস্যচাষে সাফল্যের উদাহরণ আব্দুল হালিম

✍️সেলিম হায়দার📝তালা প্রতিবেদক✅
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রা সবসময়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও লবণাক্ততার সঙ্গে লড়াই করে। এই কঠিন পরিবেশেই শ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হালিম দেখিয়েছেন কীভাবে ধৈর্য ও সঠিক প্রশিক্ষণ মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।

একসময় হালিম জীবিকা নির্বাহ করতেন কপোতাক্ষ নদে বাগদা ও গলদা চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করে। কঠোর পরিশ্রমের তুলনায় আয় ছিল খুবই কম। পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খেতে হতো। জীবনের উন্নতির আশা থেকে তিনি নদীভাঙনের পাশে জমি কেটে ঘের তৈরি করে মাছ চাষ শুরু করেন। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকায় রোগব্যাধি, খারাপ পানি ব্যবস্থাপনা ও ভুল পদ্ধতির কারণে তিনি প্রথম বছরেই বড় ক্ষতির মুখে পড়েন।

২০২০ সালের ঘূর্ণিঝড় আমফান তাঁর জীবনে আরও বড় দুর্দশা নিয়ে আসে। ঘের ভেসে যায়, মাছ নষ্ট হয়, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঠিক তখনই পাশে দাঁড়ায় সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস) ও আরএমটিপি প্রকল্প পিকেএসএফ, ইফাদ ও ডানিডা সহযোগিতায় আধা-নিবিড় মাছ চাষ, পানি ব্যবস্থাপনা, খাবার সরবরাহ, রোগ প্রতিরোধসহ আধুনিক পদ্ধতিতে তাঁকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ঘের সংস্কার ও পোনা কেনার জন্য দেওয়া হয় আর্থিক সহায়তা।

প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর হালিম ঘের ব্যবস্থাপনায় নিয়ম মেনে কাজ শুরু করেন। বাগদা ও গলদার পাশাপাশি তেলাপিয়া, পাইকা ও রুইসহ সাদা মাছের মিশ্র চাষ করেন। এতে ঝুঁকি কমে এবং আয় বাড়ে। বর্তমানে তাঁর ৩ বিঘা ঘেরে প্রতি মৌসুমে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা আয় হয়। তিনি এখন এলাকার সফল চাষিদের একজন এবং ৩–৪ জনকে কর্মসংস্থানের সুযোগও দিয়েছেন।

সাসের নির্বাহী পরিচালক শেখ ইমান আলী বলেন, “উপকূলের মানুষের জীবন সবসময়ই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। আমরা চাই এই অঞ্চলের চাষিরা আধুনিক জ্ঞান, সঠিক প্রযুক্তি আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাক। আব্দুল হালিমের মতো একজন চাষি যখন ঘুরে দাঁড়ায়, তখন সেটা শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো এলাকার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে আরও অনেক মানুষকে দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। উপকূলের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে মৎস্যচাষ এখন সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত, আর আমরা সেই পথেই কাজ করছি।”

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার সরকার বলেন, “কয়রার ভৌগোলিক পরিবেশ চ্যালেঞ্জিং হলেও সঠিক ব্যবস্থাপনায় এখানে চিংড়ি ও সাদা মাছের অসাধারণ উৎপাদন হয়েছে । আব্দুল হালিম তার বাস্তব উদাহরণ। সাসের আরএমটিপি প্রকল্পের থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি নিয়ম মেনে চাষ করে দেখিয়েছেন যে আধা-নিবিড় পদ্ধতি, পানি ব্যবস্থাপনা ও রোগ প্রতিরোধ ঠিকমতো অনুসরণ করলে লাভ নিশ্চিত।

মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, “আমাদের এলাকায় অনেক মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু আব্দুল হালিম প্রমাণ করেছে যে চেষ্টা থাকলে আবারও উঠে দাঁড়ানো যায়। সাস ও আরএমটিপির সহায়তায় তিনি নিজের ভাগ্য বদলে নিয়েছেন। তার সাফল্য অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2020 All rights reserved
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!