সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ ও তার কন্যাকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের। প্রধান আসামীকে আটক করেছে পুলিশ।
থানা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার গোবিন্দপুরের মোহাম্মাদ আলী তরফদারের মেয়েকে পিটিয়ে যখম ও গুরুতর আহত করেছে স্বামী মোখলেছুর রহমান। মারাত্মক যখম অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় ০৯/২৫ মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যেই প্রধান আসামি মোকলেসুর রহমান ওরফে কাজল (৪৫) কে আটক করেছে। ভুক্তভোগী মোছাঃ নাজমুন নাহার (৩৮), পিতা মোহাম্মদ আলী তরফদার, গ্রাম গোবিন্দপুর।
তিনি জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক মোকলেসুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জন্ম হলেও স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তি পাননি তিনি। এজাহারে বলা হয়। মোকলেসুর রহমান বিয়ের পর থেকেই বিশ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। ভুক্তভোগীর পিতা এরই মধ্যে নগদ দশ লক্ষ টাকা, স্বর্ণালংকার ও গৃহস্থালী সামগ্রী দিলেও নির্যাতন কমেনি। বরং শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৬৫), ননদ নিলুফা ইয়াসমিন (৩২) ও দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা মুক্তার (৩৭) এর প্ররোচনায় নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যায়। গত শুক্রবার ১২ সেপ্টেম্বর রাতে শ্বশুরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দত্তনগরের বাড়িতে গেলে স্বামী আবারও যৌতুকের দাবি তোলে। ভুক্তভোগী অস্বীকৃতি জানালে মোকলেসুর রহমান শাশুড়ি, ননদ ও দ্বিতীয় স্ত্রীর সহায়তায় তাকেএলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি ও থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে মাথায় আঘাত করলে তিনি গুরুতর জখম হন। মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে কন্যা সুরাইয়া মোকলেস ইশরা (১৪) কেও বেধড়ক মারধর করা হয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন সৃষ্টি হয়।
নাজমুন নাহার এজাহারে উল্লেখ করেন, স্বামী মোকলেসুর রহমান আমাকে হুমকি দিয়েছে, বাবার বাড়ি থেকে বিশ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে না পারলে আমাকে তালাক দেবে। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এতদিন সহ্য করেছি, কিন্তু নির্যাতন এখন অসহনীয় হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগীর পিতা মোহাম্মদ আলী তরফদার বলেন আমার মেয়েকে বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক কিছু দেওয়ার পরও সন্তুষ্ট হয়নি আসামিরা। আমরা দ্রুত ন্যায়বিচার চাই।
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।