সাতক্ষীরায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ও দুর্গন্ধযুক্ত মাংস বিক্রির অপরাধে জেল, জরিমানা
✍️মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল📝 জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক✅
প্রকাশের সময় :
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫
৫৮
বার পড়া হয়েছে
সাতক্ষীরায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ও দুর্গন্ধযুক্ত মাংস বিক্রির অভিযোগে মাংস ব্যবসায়ীকে জেল, জরিমানা করা হয়েছে। এসম খাবার অনুপযোগী নিম্নমানের দুর্গন্ধযুক্ত খাসি ও ধাড়ি ছাগলের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ীর নিকট থেকে।
রবিবার (২ নভেম্বর ‘২৫) সকাল সাড়ে ৮টায় সাতক্ষীরা শহরের লাবণী মোড় থেকে এ মাংস জব্দ করা হয়।
জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি অলিউর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফেইসবুকে প্রচার করেন যে, খাবার অনুপযোগী নিম্নমানের মাংস সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করে এবং ওই মাংস বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরায় বিক্রি করা হয়।
সম্প্রতি হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকরা মাংস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাংস কিনছে না এমন অভিযোগ পেয়ে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি প্রতিবাদ সভা করে বলেন, তারা রুচিসম্মত ও উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের জন্য যেসব দোকান থেকে মাংস ক্রয় করে সেসব দোকানের মেমো সংগ্রহ করে থাকেন। সেই সাথে উন্নত রুচিসম্মত খাবার পরিবেশনে আমরা বদ্ধপরিকর।
অস্বাস্থ্যকর নিম্নমানের মাংস শহরে যেন ঢুকতে না পারে সেজন্য তারা গোপনে বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দিতে থাকে। এরই ফলে এই নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী দুর্গন্ধযুক্ত, মাংসের রঙ নষ্ট, খাসি ও ধাড়ী ছাগলের ৩০ কেজি মাংস তারা জব্দ করেন।
৪৫ ধারায় দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে মোঃ আব্দুল কাদেরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অর্থদণ্ড করেন এবং ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে জব্দকৃত মাংস উপস্থিত সকলের সামনে বিনষ্ট করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী কবির মিটের মালিক আব্দুল কাদের জানাযন, দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া বাজারে ছাগল জবাই করে সেই মাংস শহরের কাচ্চি ডাইনসহ কয়েকটি হোটেলে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিল। কবির মিট নামে তার মাংসের দোকান রয়েছে শহরের কামালনগর বউবাজারে।
সাতক্ষীরা পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর রবিউল আলম লাল্টু বলেন, ৩০ কেজি মাংস জব্দ তালিকা করা হয়েছে।
জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান জানান, অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ী আমাদের সমিতিভুক্ত সদস্য নয়। শহরের বাইরের থেকে কোন মাংস শহরে বিক্রি করা যাবে না। আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহারা দিচ্ছিলাম কোন ধরনের যেন নিম্নমানের মাংস শহরে প্রবেশ করতে না পারে।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি শাহ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ী খাবার অনুপোযুক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত মাংস কোন কোন হোটেলে সাপ্লাই দেয়। সেইসব হোটেল খুঁজে বের করে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওইসব মাংস ক্রয়কারী হোটেলগুলোকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করব। রুচিসম্মত ও মানসম্মত খাবার পরিবেশন করতে আমরা নিরলকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ ধরনের মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে শাস্তি প্রদান করতে হবে। যেন তারা এ ধরনের খাওয়ার অনুপযোগী মাংস বিক্রয় করতে না পারে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রট মো. তাজুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সাতক্ষীরার সরকারি পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত, সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি অফিসার ডা. বিপ্লবজিৎ মন্ডল ও কাটিয়া ফাঁড়ির এসআই শেখ বোরহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।