মাদকের আখড়ায় পরিনত গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে এখন বন্দীদের খাবারের পাঁচ’শ কেজি মধুর ডাল বাহিরে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ জেল সুপার শওকত আলী মিয়ার বিরুদ্ধে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল এক ভিডিও বার্তায় দেখা যায় গত (৩ সেপ্টেম্বর ‘২৫) একটি ভ্যান যোগে সাদা বস্তায় ডাল বাইরে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
Apon Khan নামের এক ফেসবুক আইডি, যাহার লিঙ্ক
https://www.facebook.com/share/v/1NvQWNM6RV/ থেকে পোস্ট হওয়া ওই ভিডিও ফুটেজে বলতে শোনা যায় (৩ সেপ্টেম্বর) জেল সুপার শওকত আলী মিয়া সকাল ৯-২০ মিনিটে কারাগারের খাদ্যগুদামে যান এরপর সেখান থেকে একটি ভ্যানে করে বন্দীদের খাবারের পাচঁ’শ কেজি ডাল বাহিরে পাঠিয়ে দেন এরপর তিনি গুদাম থেকে সকাল দশ ১০ টায় বাহিরে বের হন তিনি, সেই দিনের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাইয়ের দাবিও জানানো হয় ওই ভিডিও বার্তায়, এছাড়াও ওই ভিডিও বার্তায় আরো বলতে শোনা যায় রাজু নামের একজন কারা বন্দীর কাছ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় জেল সুপারের ব্যক্তিগত সহকারী ও অর্ডারলি কারারক্ষী রুপক মিয়ার ম্যাধমে কেস টেবিল এর টাকা জেল সুপারকে দেন। এছাড়াও কারাগারের ক্যান্টিনে নামে মাত্র একটি তালিকা ঝুলানো থাকলেও সরকার নির্ধারিত মুল্যে কোনো পণ্য কারাবন্দীদের কাছে বিক্রি করা হয় না। বন্দীদের কাছ থেকে চড়া দাম নেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অনিয়মে জেল সুপারের সহযোগী হিসাবে কাজ করছেন ভারপ্রাপ্ত জেলার সুমি ঘোষ। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কারারক্ষীদের পোষ্টিং দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে, এছাড়া কারাগারের সরকারি গাড়ি জরুরি অসুস্থ কারাবন্দীদের হাসপাতালে না নিয়ে স্ত্রী ও সন্তানেরা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। এদিকে টাকা পয়সা ভাগাভাগি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলার ও সুপারের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে, যা পরবর্তীতে মিডিয়ার সামনে চলে আসে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোপালগঞ্জ জেল সুপার শওকত আলী মিয়ার সাথে সাংবাদিকদের কথা হলে তিনি আইজিপি স্যারের বিনা অনুমতিতে কোন বক্তব্য দিবেন না মর্মে জানান, এক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে অনানুষ্ঠানিক ভাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন -কারাগার অভ্যন্তরের কেউ হয়তো ষড়যন্ত্র করে আমার বাসা থেকে বের হওয়ার সময়ের ভিডিও ফুটেজ সংযুক্ত করে এমন ভিডিও তৈরি করেছে এ বিষয়ে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই মর্মে জানান। তবে কারারক্ষীদের রেশনের চাল/ ডাল তারা বিক্রি করে থাকেন। হয়তো ওই ভিডিও ফুটেজই কারারক্ষীদের রেশনের চাল/ ডাল বিক্রির ফুটেজ হতে পারে। তিনি আরো বলেন আমি এখানে যোগদানের পর থেকেই মাদক ঠেকাতে কারাগারে নিয়মিত তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছি। এ সময় তার যোগদানের পরে এ কারাগারের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে মর্মেও দাবি করেন তিনি।
একদিকে কারাগারে মাদকের আখড়া, অন্যদিকে বন্দীদের খাবারের মসুর ডাল বাহিরে নেওয়ার বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামানের ব্যবহৃত সরকারি ০১৭….৪৯৮ নম্বরের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কলটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।