গোপালগঞ্জে কৃষকদেরকে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষে আগ্রহী করতে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় নারী-পুরুষ সহ মোট ৬০ জন কৃষক ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নেন।
পরে প্রশিক্ষণ শেষে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সেকেন্দার শেখ -এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি, ঢাকা -এর অতিরিক্ত পরিচালক (হর্টিকালচার উইং) জাকিয়া বেগম, ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ আঃ কাদের সরদার, সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জি.এম অলিউল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়া অন্যদের মধ্যে সদর উপজেলা এসএপিপিও মোঃ লিয়াকত হোসেন, এসএএও মিরণ বিশ্বাস, সজল কুমার ভদ্র, পিন্টু লাল হাওলাদার, প্রদীপ হালদার সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, নিরাপদ ও ক্যামিকেল মুক্ত শাক, সবজি ও ফল মূল মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ করে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত ফসল উৎপাদন করে সংসারের চাহিদা পূরণ সহ আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন সম্ভব। গোপালগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২১ শতাংশ জমি বছরের অধিকাংশ সময় ধরে পানির নিচে পতিত থাকে। এসব পতিত জমিতে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষাবাদ করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে এবং আমদানি ও পরনির্ভরশীল হতে স্বনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
প্রকল্প পরিচালক ড. বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা ও সম্প্রসারণের কার্যক্রম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি ও পূণ্যভূমি গোপালগঞ্জ জেলা থেকে শুরু হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। অপার সম্ভাবনাময় এ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে কৃষকেরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি তাদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে। এছাড়া বিস্তৃর্ণ এ জেলায় খাল-বিল হাওরে সর্বত্র বিরাজ করছে কচুরিপানা। ভাসমান বেড প্রস্তুত করণের অন্যতম উপাদান হচ্ছে এই কচুরিপানা। দীর্ঘ ৮ মাস এই পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন শেষে পরবর্তীতে, বেড ভেঙে প্রচুর পরিমাণে জৈবসার সংগ্রহ করা সম্ভব। এই জৈব সার নিরাপদ ফসল উৎপাদনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তাই ভবিষ্যৎ বিবেচনায় গোপালগঞ্জে উৎপাদিত জৈব সার বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
পরে তারা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের নখড়ির চর এলাকায় বেশ কয়েকটি ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা (পেঁয়াজ) জাতীয় ফসল উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করে স্থানীয় মাঠকর্মীদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।