ঘুম পেরিয়ে জীবন
একদিন সকালে ঘুম ভাঙবে না আমার,
লোকে বলবে, আমি নেই।
আমি থাকবো হয়তো একফালি ঘাসের নিচে,
যেখানে একটা পাখি বসে গান গায়—
সে জানবে না আমি মানুষ ছিলাম;
ভাববে, আমি আর সে—একই প্রজাতির দুই ব্যথা।ঘাস বলবে, “তোমরা যারা আমার বুক চিরে চলে যাও,
ভেবো না আমি কেবল নিস্প্রাণ সবুজ।
আমিও তোমাদের মতো,
আমার রক্ত সবুজ বলে কি আমি তোমাদের চেয়ে আলাদা?”একদিন আকাশ আসবে নিচে,
তার হারানো নীল খুঁজতে,
সে দেখবে আমরা সবাই
এক একটা ছায়া হয়ে ঘুমিয়ে আছি
কোনো নাম বা ধর্ম ছাড়াই।তখন কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কেউ বলবে না—
কে হিন্দু, কে মুসলমান,
কে ছোট, কে বড়,
সবার গলায় তখন একই রকম নিঃশব্দতা—
সেই নীরবতাই পৃথিবীর সবচেয়ে সত্য গান।তারারা খসে পড়বে না আকাশে,
খসে পড়বে আমাদের চোখে।
একটা মুখ জ্বলবে অন্ধকারে—
সে মুখ কারো নয়,
সে মুখ কেবল একটি প্রাণের মুখ।একদিন পৃথিবী থেমে যাবে একটু,
সবাই দেখবে—
জীবনের সব দ্বন্দ্ব, ধর্ম, ভাষা
মাটির নিচে এসে
এক কথায় দাঁড়িয়েছে:
“প্রাণ শুধু প্রাণ—তাকে আলাদা করা যায় না।”আর তখন,
আমরা যারা এক জীবনে এক হতে পারিনি,
তারা মৃত্যুর ঘুম থেকে উঠে
এক নতুন ভোরে
একটা জীবন হয়ে জেগে উঠবো—
অলৌকিক নয়,
শুধু মানুষ হয়ে।১১ জুন, ২০২৫