
সাতক্ষীরায় লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট কালোমুখো হনুমান। বিরল প্রজাতির কালোমুখো হনুমান শুধুমাত্র সাতক্ষীরার গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে না, ছুটছে বসত বাড়িতেও। খাদ্যের অভাবে দলছুট হয়ে পড়েছে কালোমুখো হনুমান। কোথাও ৬টি আবার কোথাও ৪ থেকে ৫টি একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। উৎসুক জনতা হনুমানগুলো দেখার জন্য এই ভিড় করছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর বাজারে রবিবার (২৫ মে ‘২৫) বিকালে ৫/৬টি কালোমুখো হনুমানকে দলবদ্ধভাবে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দলছুট হনুমান এলাকায় ঘুরাঘুরি করে। তবে তারা কাউকে কোন ক্ষতি করছে না। এলাকার বিভিন্ন গাছে, বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাচীরের ওপর চলাচল করতে দেখা যায় কালোমুখো হনুমান। উৎসুক জনতার মধ্যে অনেকে হনুমানগুলোকে কলা, বিস্কুট, লেবু, পাউরুটি খেতে দিচ্ছে। অনেকে আবার হনুমানকে নানাভাবে বিরক্তও করছে।
জানা গেছে, যশোর জেলার কেশবপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা বালিয়াডাঙ্গা, ব্রহ্মকাঠি, রামচন্দ্রপুর, দুর্গাপুর, সাবদিয়া, মজিদপুর এলাকায় প্রায় ৫০০টি হনুমান বসবাস করে। তবে কেশবপুর পশু হাসপাতাল ও খাদ্যগুদাম এলাকায় এগুলোকে বেশি দেখা যায়। কবি মাইকেল মধুসূদনের স্মৃতি বিজড়িত সাগরদাঁড়ি গ্রামের “মধু পল্লি” দেখতে সারাবছর কমবেশি পর্যটক আসেন। তাদের দেওয়া খাবারেই এসব হনুমানের জীবন চলতো।
যশোরের কেশবপুর এলাকার সংবাদকর্মী আব্দুর রহমান জানান, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার হনুমানগুলোকে প্রাণী বিভাগের তত্ত্বাবধানে খাবার সরবরাহ করা হয়। তবে কোনো কারণে খাদ্য সংকট দেখা দিলে মাঝে-মধ্যেই কিছু হনুমান লোকালয়ের দিকে চলে যায়। কখনো কখনো অধিক খাদ্য ও ভালো আবাসের সন্ধানে মাইলের পর মাইল অতিক্রম করে এসব কালোমুখো হনুমান।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্র জানায়, কালোমুখো হনুমান বনের বাইরে বাস করা হনুমানের একটি প্রজাতি। বৈশ্বিক বিরূপ আবহাওয়া, মানুষের উৎপাত, খাদ্য সংকটি এবং প্রতিকূল পরিবেশের কারণে হনুমানগুলো দলে দলে এলাকা ত্যাগ করে থাকে।
সূত্রটি আরও জানায়, লোকালয়ে আসা কোনো কোনো হনুমান বনে ফিরে যায়, অনেক হনুমান মারাও যায়। লোকালয়ে এলে হনুমানগুলোকে বিরক্ত না করে সম্ভব হলে প্রয়োজনীয় খাবার দিয়ে তাদের প্রাণ বাঁচানোর আহ্বান জানান প্রাণিসম্পদ অফিসের ওই কর্মকর্তা।