২০২৪ সালের কথা, মাত্র ৩ নাম্বারের জন্য মেডিকেলে চান্স হলো না। ভেঙে পড়লো মন। আগ্রহ হারিয়ে ফেলল পড়ার প্রতি। অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাওয়ায় মনোবল কমতে শুরু করলো।
বলছি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার প্রণয় সরকার অন্তরের ব্যর্থতার পরেই সফলতার গল্প। ২০২০ – ২১ সালে তারালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এস এসসিতে জিপিএ-৫, অতঃপর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে এইচ এসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ- ৫ ; এত জিপিএ ৫ পেয়েও মেডিকেলে চান্স হলো না দু- দুবার। এবার মাত্র ২ নাম্বারের জন্য হাতছাড়া হলো মেডিকেল চান্স। প্রণয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। ব্যর্থতা তাকে ছেয়ে বসেছে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে হেরে যাওয়ার উপক্রম। শেষ মুহূর্তে অনুপ্রেরণা নতুন অধ্যায় শুরু হল বাবার হাতটা যখন মাথার উপরে পড়লো। বাবা নির্মল সরকার পেশায় একজন গ্রাম ডাক্তার। শিক্ষানুরাগী এই মানুষটি সন্তানের হেরে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তিনি প্রণয়কে নতুনভাবে পথচলা শুরু করতে সাহস যোগান। বাবা- মায়ের ছোট ছোট আবেগময় কথাগুলো মনে নতুন আশার জন্ম দিল। ২০২৫ সালের এবারও মেডিকেলে চান্স না পেলেও ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫ তম হলো প্রণয়। শুধু কি তাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ১৩৭ তম অবস্থান গেড়েছে নিজের। সুযোগ পেলে ফার্মাসিস্ট ডিপার্টমেন্টে পড়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে সে। তার লক্ষ্য দেশের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করে দেশের মানুষের কল্যাণময়ী হয়ে এগিয়ে আসা। তার সাথে কথা বলে জানাগেছে, একজন প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্যই এতদিন লেখাপড়া করেছে। পরবর্তী শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মানুষের মত মানুষ হয়ে দেশ আর মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার পরিকল্পনা করার কথা বলেছে। সে তার মা, বাবা পরিবার এবং শিক্ষক সর্বোপরি কালিগঞ্জ বাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছে। সে বড় হয়ে তার নিজ গ্রাম তারালী উপজেলার উন্নয়নে এগিয়ে আসতে চায়।