শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায অনুষ্ঠিত  তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে কালিগঞ্জে লিফলেট বিতরণ আশাশুনিতে হিন্দু কলেজ ছাত্রীকে অপহরণ: রাতভর ধর্ষণের পর প্রেমিকের কাছে হস্তান্তর সাতক্ষীরায় জাতীয় পর্যায়ে আন্ত: কলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন খেয়োয়াড়দের সংবর্ধনা খুলনায় তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তালায় প্রস্তুতি সভা তালায় বাল্যবিবাহে নিষেধাজ্ঞা জারি সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনক্রুদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত তালার শাহপুর স্কুলের ছোটবন্ধুরা পেলো উপহার গোবিপ্রবি’তে শিক্ষকদের গবেষণায় দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মশালা গোপালগঞ্জে মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

গোপালগঞ্জে শিক্ষক-দম্পতির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

✍️কে এম সাইফুর রহমান📝গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিবেদক✅
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৭৬ বার পড়া হয়েছে

স্বামী প্রধান শিক্ষক, একই বিদ্যালয়ে স্ত্রী যদি হয় সহকারী শিক্ষিকা দু’জনের ক্ষমতা মিলিয়ে ফ্যাসিস্ট রুপ ধারণ করাটাই স্বাভাবিক। এমনটাই ঘটেছে গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এস. এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দীর্ঘ ১৩ মাস ধরে অনিয়মের রাজত্ব চালানোর অভিযোগ উঠেছে মাহাবুব মুন্সী ও রুকসানা আক্তার লিরা শিক্ষক- দম্পতির বিরুদ্ধে।

এই শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, তাঁদের প্রতিষ্ঠিত কোচিং সেন্টারে ভর্তিতে বাধ্য করা, ইংলিশ এভরিডে নামক গাইড কিনতে নির্দেশ দিয়ে লাইব্রেরী থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়া। প্রত্যায়ন পত্র বা টিসি দিতে ৩শ হতে ১ হাজার পর্যন্ত টাকা আদায়, বিভিন্ন শ্রেণিতে আসন বাড়িয়ে ১০ হাজার হতে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়ে ভর্তি করা, আইডি কার্ড তৈরির নামে বাড়তি টাকা আদায় করে ভোগ করা, ভারতীয় যাদুবিদ্যার বই কিনতে বাধ্য করে মধ্যস্বত্ত্বভোগী হওয়া, গোপনে স্কুল বাগানের ফল বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ, বিভিন্ন দপ্তর থেকে পাওয়া বিদ্যালয়ের উন্নয়নের বরাদ্দ খরচ না করে আত্মসাৎ করা সহ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকারী শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার করা।

তাঁদের এ সকল অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকারী শিক্ষকগণ। তবে ওই শিক্ষক দম্পতির রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক প্রভাব প্রতিপত্তির ভয়ে প্রকাশ্যে কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানাগেছে প্রধান শিক্ষক মাহাবুব মুন্সী গত ৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলেও সহকারী শিক্ষিকা রুকসানা আক্তার লিরা এই স্কুলে একযুগ ধরে শিক্ষকতা করছেন। এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকারী শিক্ষকদের সাথে ঝগড়া, গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগে একাধিক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো। আওয়ামী রাজনীতিবিদদের সাথে সখ্যতা থাকায় তৎকালীন সময়ে এই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষা দপ্তর। উল্টো মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরে আওয়ামী নেতাদের মাধ্যমে লবিং করে পুরস্কার হিসেবে নিজের স্বামীকে মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদায়ন করান। এর পর থেকে হয়ে ওঠেন আরো বেশি বেপরোয়া। স্বামী-স্ত্রী মিলে শুরু করেন অনিয়ম ও দুর্নীতির রাজত্ব। জানা গেছে এই শিক্ষক দম্পতি গোপালগঞ্জ শহরের পাঁচুড়িয়ায় জায়গা কিনে করেছেন আলিশান তিনতলা বাড়ি।

বিদ্যালয়টির সাবেক ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোঃ বাশার হোসেন (আইনজীবী) জানান, প্রধান শিক্ষক মাহাবুব মুন্সীর স্ত্রী সহকারী শিক্ষক রুকসানা আক্তার লিরা কর্তৃক পরিচালিত শহরের চাঁদমারী এলাকার কোচিং সেন্টারে মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়তে বাধ্য করেন। তার কোচিং এ না পড়লে বাচ্চাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার সহ ক্লাসে ফেল করানোর ভয় দেখানো হয়। এই অনিয়ম অব্যবস্থাপনা দেখে আমার বাচ্চাকে কিছু দিন আগে অনির্বাণ স্কুলে ভর্তি করেছি। শুনেছি ওই সহকারী শিক্ষিকা এখনো শিক্ষার্থীদের তার পরিচালিত কোচিং সেন্টারে ভর্তি হতে বাধ্য করছে। তার স্বামী বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন শিক্ষক ও অভিভাবক কথা বলতে সাহস পায় না। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, স্কুলে ১ হাজারের ওপরে শিক্ষার্থী রয়েছে পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য জনপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করে সবোর্চ্চ জনপ্রতি ২০ টাকা ব্যয় করে বাকি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন। এছাড়াও তাদের কোচিং সেন্টারে প্রতি মাসে ১২’শত টাকা দিতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এই স্কুলটিতে অনেক গরীব অভিভাবকদের সন্তান রয়েছেন তারা নিয়মিত হিমসিম খাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, প্রধান শিক্ষক মাহাবুব মুন্সী ও রুকসানা আক্তার লিরা এতটাই বেপরোয়া যে, তাদের সামনে কোন শিক্ষক-শিক্ষিকা তো দূরের কথা অভিভাবকরাও কথা বলতে ভয় পায়।

স্কুলের কোন শিক্ষকের সাথে ভালো ব্যবহার করে না। স্কুলের উন্নয়নের দিকে তাদের নজর নেই, কিভাবে তাদের কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা যায় এবং অভিভাবকদের কাছ থেকে কোন কৌশলে বাড়তি টাকা আদায় করা যায় সেই পলিসি আটে। এ বছর ৫ম শ্রেণি থেকে যে সকল শিক্ষার্থী পাস করেছে তাঁদের টিসি দেওয়ার সময় বাধ্যতামূলক ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত উৎকোচ আদায় করেছেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ১০০ হতে ৫০০ টাকা উৎকোচ আদায় করে। এছাড়াও একেক দিন একেক শিক্ষিকাকে তাঁদের (স্বামী -স্ত্রী)’র জন্য ভালো ভালো খাবার রান্না করে আনার অর্ডার দেয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদ থেকে অনুদান পাওয়া ২ লক্ষ টাকার কোন কাজ করেননি। অর্থ বছর ঘুরে গেলে এই টাকা পুরোটাই আত্মসাৎ করবেন ওই শিক্ষক-দম্পতি। এর আগেও এই ধরনের বরাদ্দ আত্মসাৎ করেছেন তারা। এই শিক্ষক দম্পতির অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকাশ্যে এবং গোপনে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ।

এ সকল অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক- দম্পতি মাহাবুব মুন্সী ও রুকসানা আক্তার লিরা দাবি করেন তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জ্যোৎস্না খাতুন জানান, এটি জেলার একটি স্বনামধন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়। এধরনের অনিয়ম-বিশৃংখলার সত্যতা পেলে সবোর্চ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সুচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ
  • ১৬:৩২ অপরাহ্ণ
  • ১৮:৩৭ অপরাহ্ণ
  • ২০:০০ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ
©2020 All rights reserved
Design by: SHAMIR IT
themesba-lates1749691102
error: Content is protected !!