শূন্যতার দরজায়
একদিন সহসা ফিরে যাবো—
শীতের শেষ বিকেলে, ঘাসের চাদরে
ছড়িয়ে থাকবে ফেলে আসা বিকেলগুলোর ক্লান্ত রোদ।
শুনবো না আর কাকের ডাকে ভিজে-যাওয়া পল্লবীর গান,
শোনার কিছু বাকি থাকবে না তবু—
একটা নুড়ি পাথর, একটা জ্যোৎস্না-ছোঁয়া জানালা,
একটা হিজল পাতায় আটকে থাকা কুয়াশা।মুমূর্ষু হৃদপিন্ড নিয়ে যারা—
নদীর মৃদু ঢেউয়ে ছিঁড়ে যাওয়া কাঁঠালের পাতা,
পাখির পালকের নিচে ঘুমিয়ে থাকা নিভৃত রাত,
একটা শিশিরভেজা ভোরের শূন্যতা
যেখানে জলছাপ পড়ে থাকে
না-ফেরা মানুষের নিঃশ্বাসে।ধীরে বুঝেছি যারা—
শিকারীর বন্দুক থেকে পালানো বুনোহাঁসের ডানা
জোনাকির চোখে কাঁপে,
গভীর রাতে কুয়াশার ভেতর শুয়ে থাকা কুড়ানো স্বপ্ন
অধরা মেঘের মতো কুয়াশার শরীরে গলে যায়।
ভীষণভাবে জেনেছি, পথ ফুরিয়ে গেলে
সব রাস্তার দাগ মুছে দেয়
একটা বিষণ্ন বিকেল।অনুভূতিহীন স্পর্শ করেছি যারা—
অপরাহ্নের রোদে তপ্ত ঘাসের শীতলতা,
নদীর নিঃসঙ্গতা যখন শরতের বাতাসে
ভিজে যাওয়া হিজলের ছায়া হয়ে নামে।
হৃদয় দিয়ে দেখেছি কারা—
সন্ধ্যার আলোয় নুয়ে পড়া শেফালির গন্ধ,
কোনো এক নারীর চোখে ফেলে-আসা বর্ষার বিষাদ,
একটা আদিম বৃষ্টির স্মৃতি হয়ে থাকা ভিজে চুল।তবু মৃত্যুর আগে আর কী জানবো আমরা?
পৃথিবীর সব রোদ, বাতাস, কুয়াশা—
একদিন নামবে আমাদের নিঃশ্বাসের ঘরে,
চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকবে অন্ধকারের দেয়ালে
একটা বুনো গন্ধরাজ ফুলের মতো,
ম্লান, অথচ অনিবার্য।খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
১৭ মার্চ, ২০২৫