ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি-২০২৪ বাস্তবায়ন এবং এই নীতির আলোকে জ্বালানি খাত সংস্কার ও জ্বালানি অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২১ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর ‘২৪) দুপুরে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সাতক্ষীরা জেলা কমিটির প্রতিনিধিরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিষ্ণুপদ পাল, ক্যাব সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সভাপতি এড. মোঃ আজহারুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক পারভিন আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদার রহমান, নির্বাহী সদস্য হাসানুজ্জামান, আহাম্মাদুল কবীর, জিএম ইশতিয়াক জামিল, আব্দুল নঈম, সামিউল ইসলাম, জুলিয়া খাতুনসহ অন্যান্যরা।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়, জনগণ যেন সঠিক দাম, মাপ ও মানে বিদ্যুৎ এবং প্রাথমিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেবা পায় এবং লুণ্ঠনের শিকার না হয়, সেজন্য বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহের সকল পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহিতা তথা জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর পক্ষ থেকে লুণ্ঠন প্রতিরোধে অন্তর্বতী সরকারের আমলে জ্বালানি খাত সংস্কার ও জ্বালানি অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২১ দফা দাবি পেশ করা হয়।
দাবি সমুহ হলো, (১) কষ্ট প্লাস নয়, কষ্ট বেসিসে লুণ্ঠনমুক্ত মুনাফাবিহীন জ্বালানি খাত পরিচালনা ও উন্নয়ন নীতির ভিত্তিতে সরকারি সেবা খাত হিসেবে বিইআরসি’র আওতায় অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি খাত সংষ্কার চাই। (২) ভর্তুকি ও মূল্যহার বৃদ্ধি ব্যতিত বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহে লুণ্ঠনমূলক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয়ের নিশ্চয়তা চাই। (৩) জনগণের জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য বিগত সরকারের আমলে জনস্বার্থে দায়েরকৃত সকল মামলা সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ দেখতে চাই। (৪) বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং ইউটিলিটিসমূহের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ বিইআরসি দ্বারা গঠিত ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নিষ্পত্তি চাই। (৫) বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি সরবরাহের যে-কোন পর্যায়ের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ এবং ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসাবে বিইআরসি আইনের ধারা ৪৬, ৪৭ ও ৪৯-এর আওতায় তাদের বিচার চাই। (৬) সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহি চৌধুরী, সাবেক বিদ্যুৎ সচিব ও মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এবং সাবেক বিদ্যুৎ সচিব ও মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং সাবেক বিদ্যুৎ সচিব, বিইআরসির সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড-এর পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলামের জ্বালানি অপরাধী হিসেবে বিচার চাই। (৭) পেট্রোলিয়াম পণ্যসমূহের বিদ্যমান মূল্যহার ন্যায্য ও যৌক্তিক কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ের প্রস্তাব বিইআরসিতে পাঠানোর জন্য বিপিসি’কে নির্দেশ প্রদান এবং সেইসাথে ২০১২ সাল থেকে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্যহার নির্ধারণ সংক্রান্ত আটকে রাখা ৩টি প্রবিধান কোনরকম পরিবর্তন ব্যতিত অবিলম্বে গেজেটে প্রকাশ মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই। (৮) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সকল কোম্পানি ও সংস্থার পরিচালনা পর্ষদসহ সকল কমিটি থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার চাই এবং সেই সাথে পদাধিকার বলে কোন বোর্ড বা কমিটিতে থাকা প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারী/কর্মকর্তার জন্য প্রদত্ত যে-কোন প্রকার সম্মানী নিষিদ্ধসহ ২১ দফা দাবি পেশ করা হয়।