সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার মাটিকোমরা গ্রামের নজির আলী মোড়লের ছেলে বিকাশ এজেন্ট শাহ আলম মোড়লকে গুলি করে ও তার বন্ধু অহিদুল ইসলামকে পিটিয়ে জখম করে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম হৃদয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
আজ বুধবার (০৯ অক্টোবর ‘২৪) সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নয়ন কুমার বড়াল মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক প্রদীপ কুমার রায় এর ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন শুনানী শেষে এক দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন।
রিমাণ্ড মঞ্জুর হওয়া রবিউল ইসলাম হৃদয় (৩০) কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পাইকাড়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে।
কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক তাপস কুমার ঘোষাল ও বিকাশ ব্যবসায়ি শাহ আলম মোড়লের স্ত্রী মাহমুদা খাতুনের দায়েরকৃত পৃথক দুটি মামলা থেকে জানা যায়, ৫ অক্টোবর শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নলতা বাজারের করিম মার্কেটের ফতেমা টেলিকমের মালিক শাহ আলম মোড়ল তার প্রতিবেশি বন্ধু অহিদুলকে নিয়ে বিকাশের টাকাসহ একটি বাই সাইকেল নিয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে তারা শুশীলবাগের সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের বাঁশবাগানের সামনে পৌঁছালে কালিগঞ্জ উপজেলার পাইকাড়া গ্রামের নূর আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম হৃদয়, একই গ্রামের বাবলু মোড়লের ছেলে আব্দুল আলীম ও শাহদাত খাঁ’র ছেলে এসকেন্দার খাঁ মুখে কালো কাপড় বাঁধা অবস্থায় শাহ আলম ও অহিদুলের উপর হামলা চালায়। তারা অহিদুলকে পিটিয়ে জখম করে শাহ আলমের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। একপর্যায়ে রবিউল ইসলাম হৃদয় তার হাতে থাকা বিদেশী পিস্তল দিয়ে শাহ আলমকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলি তার পেট ভেদ করে পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। চিৎকার শুনে স্থানীয় বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম খোকনের স্ত্রী রেহেনা খাতুন বাড়ি থেকে বের হয়ে রবিউল ইসলামের মাতায় টর্চ লাইটের বাড়ি মারলে সে মাটিতে পড়ে যায়। আব্দুল আলীম ও এসকেনদার পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক তাপস কুমার ঘোষাল বাদি হয়ে ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনে একটি ও শাহ আলম মোড়লের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন বাদি হয়ে ওই তিন ছিনতাইকারির নাম উল্লেখ করে ৬ অক্টোবর থানায় পৃথক দুটি মামলা(জিআর-১৫৯ ও জিআর-১৬০ কালিঃ) দায়ের করেন।
মামলা দুটির তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক প্রদীপ কুমার রায় জানান, গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম হৃদয়কে অস্ত্র আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ৭ অক্টোবর আদালতে ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়। বুধবার শুনানী শেষে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নয়ন কুমার বড়াল তার এক দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। বুধবার রবিউল ইসলাম হৃদয়কে মাহমুদা খাতুনের মামলায় আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাকে বুধবার বিকেলে আদালত থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।
উপপরিদর্শক প্রদীপ কুমার রায় আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় চলতি বছরের ১৫ মার্চ দায়েরকৃত জিআর ৫০ /২৪নং চুরির মামলা, সদর থানায় ২০২২ সালের ৩০ জুন জিআর-৫০৬/২২ নং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও একই থানায় ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি ১১ নং দস্যুতার মামলা বিচারাধীন রয়েছে।